1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন ‘ভুয়া'

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ আগস্ট ২০১৮

দুর্ঘটনার জন্য পাইলট আবিদ সুলতানকে দায়ী করে কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন ‘ভুয়া' বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের বিমান পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স৷

https://p.dw.com/p/33pxY
ছবি: Reuters/N. Chitrakar

ওই ঘটনার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে তারা বলছে, ইউএস-বাংলাকে ‘হেয় করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে' কাঠমান্ডু পোস্ট এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ লিখিতভাবে এর প্রতিবাদ জানানো হবে৷

অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির এই ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটিতে নেপাল ছাড়াও বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের কর্মকর্তারা রয়েছেন৷ ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশনের বিধি অনুসরণ করে তাঁরা কাজ করছেন৷

ওই কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে থাকা ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহও প্রতিবেদনটির সত্যতা নাকচ করেছেন

গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে যাত্রা করে দুপুরে কাঠমান্ডুতে নামার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-২১১৷ আরোহীদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷

দুর্ঘটনায় পাইলট আবিদ এবং কো পাইলট পৃথুলা রশিদও নিহত হন৷

এ ঘটনায় পাইলটকে দায়ী করে সোমবার কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘পাইলটের ধারাবাহিক কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়৷ পাইলট বিষন্ন ছিলেন, ককপিটে অনবরত ধূমপান করেন, ফ্লাইটে নারী সহকর্মী সম্পর্কে অবমাননাকর কথা বলছিলেন৷ এছাড়া তিনি আগে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷''

কামরুল ইসলাম

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ বিভাগ) কামরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কাঠমান্ডু পোস্ট নেপাল সরকারের তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তা ভিত্তিহীন। নেপাল সরকারের আলাদা কোনো তদন্ত কমিটি নেই।

‘‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশনের অধীনে একটিই তদন্ত কমিটি কাজ করছে । সেখানে বাংলাদেশ, নেপাল, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন, উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান– সবার প্রতিনিধি আছে৷''

এই কমিটির তদন্ত এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তারা কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি। তাহলে কীভাবে বলা হলো, পাইলট মানসিক চাপে ছিলেন? এখন পর্যন্ত ব্ল্যাক বক্স রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। আমরা যত দূর জানি, ডিসেম্বর নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে৷''

পাইলটের মানসিক চাপ, ককপিটে অনবরত ধূমপান এবং নারী সহকর্মী সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্যের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সে বিষয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ককপিটে কী হয়েছে, তা তো আমরা জানি না, কারণ, আমাদের হাতে তো কোনো তদন্ত প্রতিবেদন নেই৷

‘‘তবে ফ্লায়িংয়ের আগে পাইলট পুরোপুরি ফিট ছিলেন৷ যদি তাঁর কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা থাকত, তাহলে মেডিকেল টেস্টে ধরা পড়ত। আর তাঁর কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ তো নারী, কথা বললে তো তিনি নারীর সঙ্গেই কথা বলবেন৷''

সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ

যে প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট এই খবর ছেপেছে, তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্ঘটনাটি তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্য এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি)-র প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ৷

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বেবিচক-এর ফ্লাইট অপারেশন কনসালটেন্ট সালাউদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে তা ভুয়া। কারণ, আমরা তদন্তের ৫০ ভাগের মতো কাজ শেষ করেছি। আর আমাকে ছাড়া তদন্ত কমিটির কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ হতে পারে না৷''

তাঁদের তদন্তে এখন পর্যন্ত পাইলট সম্পর্কে এমন ‘কোনো কিছু' উঠে আসেনি বলে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন তিনি৷

তদন্ত কমিটি নিয়ে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘নেপাল ইনভেস্টিগেশন কমিশন' নামের এই তদন্ত কমিটি নেপাল সরকারই গঠন করেছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী, তা ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশনের নীতিমালা ও নির্দেশনা মেনেই করা হয়েছে।

‘‘কমিটির চেয়ারম্যান হলেন নেপাল সিভিল এভিয়েশনের একজন সাবেক পরিচালক। কমিটিতে নেপাল সিভিল এভিয়েশর মিনিস্ট্রির একজন যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ থেকে আমি, নেপালের কয়েকজন পাইলট, ক্যানাডা থেকে একজন, উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বোম্বারডিয়ার থেকে একজন আছেন। আনুমানিক ডিসেম্বরে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারব বলে আশা করি।''

পরে ইউএস-বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘কাঠমান্ডু পোস্ট  নেপাল সরকারের যে রিপোর্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন করেছে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই প্রতিবেদন করেছে। এর কোনো ভিত্তি নেই। আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কারণ এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি বা তদন্ত কাজ শেষ হয়নি।’’

তিনি বলেন, ‘‘ইউএস-বাংলার ককপিটে পাইলটের ধূমপানের প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের ফ্লাইটের ককপিটে ধূমপান নিষিদ্ধ। পাইলট এবং ক্রুদের চেক করে বিমানে ওঠানো হয়। আর যদি ধূমপান করতো তাহলে ফায়ার অ্যালার্ম বাজত। ককপিটে সিসি ক্যামেরা থাকে না। তাই এটা প্রমাণ করাও সম্ভব নয়।’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য