‘আমার ছেলে নির্দোষ’
২৪ মার্চ ২০১৭দু'বছর আগে ফ্রেঞ্চ আল্পসে জার্মানউইংস-এর একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়৷ সেই ঘটনায় তাঁর ছেলের কোনো হাত ছিল না বলে দাবি করেছেন কো-পাইলট আন্দ্রেয়াস লুবিৎস-এর বাবা গ্যুন্টার লুবিৎস৷ সিনিয়র লুবিৎস শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে একটি রিপোর্ট উপস্থাপন করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর ছেলের ওপর সমস্ত দোষ চাপাচ্ছে৷ যেদিন সেই দুর্ঘটনা হয়েছিল, দু'বছ পর ঠিক সেদিনটাতেই গ্যুন্টার লুবিৎস এই সংবাদ সম্মেলন করায়, ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার৷
সংবাদ সম্মেলনের পর ঐ বিমান দুর্ঘটনায় যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷ তাঁরা বলেন, এই দু'বছরের মধ্যে আন্দ্রেয়াসের পরিবারের কোনো ব্যক্তি কোনো বক্তব্য দেননি কেন? জার্মান তদন্ত কর্মকর্তারা এ বছরের জানুয়ারিতে তাঁদের তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেন, যেখানে বলা হয় ২৭ বছরের আন্দ্রেয়াসের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা ছিল এবং ঐ দুর্ঘটনার জন্য সে-ই দায়ী৷
আন্দ্রেয়াসের বাবা সাংবাদিক টিম ফান বেফেরেন-এর সঙ্গে নিজস্ব তদন্তের ফলাফল তুলে ধরেন সংবাদ সম্মেলনে৷ এবং বলেন, ‘‘আমরা ঐ তদন্তকে ভুল প্রমাণ করবো৷'' তিনি জানান, বিমানের কেবিনে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস লিক হয়ে কো-পাইলটকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল আর তার ফলেই ঘটেছিল ঐ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার ছেলে অত্যন্ত দায়িত্বশীল ছিল৷ এ ধরনের ঘটনা ঘটানো তাঁর পক্ষে কোনোমতেই সম্ভব না, বিশেষ করে এমন একটা ঘটনা যা এতগুলো মানুষের প্রাণ নিতে পারে৷''
গত বছরও আন্দ্রেয়াসের পরিবার সমালোচনার শিকার হয়েছিল৷ কারণ এক বছর পূর্তিতে ছেলের হাসি মুখের একটি ছবি পত্রিকায় ছাপিয়ে আন্দ্রেয়াসের পরিবার লিখেছিল, ‘আমরা তোমাকে ভুলবো না৷' বলা বাহুল্য, সেখানে নিহতদের কারো কথা উল্লেখ করা হয়নি৷
জার্মান আইনজীবীদের বিশ্বাস, আন্দ্রেয়াস ইচ্ছাকৃতভাবে এয়ারবাস এ-৩২০ বিমানটি বিধ্বস্ত করেছিল, যা কিনা বার্সেলোনা থেকে ড্যুসেলডর্ফ যাচ্ছিল৷ ফ্লাইট ক্যাপ্টেনকে ককপিটের বাইরে রেখে সে নাকি দরজায় বন্ধ করে দিয়েছিল৷ ড্যুসেলডর্ফের আইনজীবী ক্রিস্টোফ কুম্পা সংবাদ সংস্থা এপিকে জানান, এই দুর্ঘটনার অল্প কয়েকদিন আগে আন্দ্রেয়াসের মানসিক সমস্যা ধরা পড়ে এবং এ জন্য সে ওষুধ নিচ্ছিল৷ এমনকি পাশাপাশি অবসাদের চিকিৎসাও করাচ্ছিল সে৷
ফ্রেঞ্চ আল্পসের যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, সেখানে আজ একটি গির্জায় সমবেত হন নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা৷ ঐ দুর্ঘটনায় পশ্চিম জার্মানির যে স্কুলের ১৬ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশেও বিশেষ শোকসভার আয়োজন করা হয়েছিল স্কুলটিতে৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)