পাইলটদের কি আর গোপনীয়তার অধিকার থাকবে না?
৩১ মার্চ ২০১৫অভিশপ্ত বার্সেলোনা-ড্যুসেলডর্ফ উড়ানের কো-পাইলট আন্দ্রেয়াস লুবিৎস-এর মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতার কথা জানা যাচ্ছে৷ তবে সেটা পাইলট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করার আগের ঘটনা৷ তার পরেও মানসিক অবসাদের লক্ষণ দেখা গেছে৷ এই প্রেক্ষাপটে জার্মানিতে ডাক্তার ও রোগীদের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে৷ বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী রোগীদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে ডাক্তারদের চরম গোপনীয়তা বজায় রাখতে হয়৷ এমনকি রোগী মারা গেলেও সেই তথ্য গোপনই থাকে৷ অনেকে বলছেন, এমন নিয়মের কোনো বিকল্প থাকলে আন্দ্রেয়াস লুবিৎস-এর ক্ষেত্রে ডাক্তাররা লুফটহানসা বা জার্মানউইংস-কে ঠিক সময়ে সতর্ক করতে পারতো৷ সে ক্ষেত্রে এতগুলি মানুষের প্রাণ বেঁচে যেত৷
কেটি নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মেডিকাল সিক্রেসি' কত বড় সমস্যা হতে পারে, এটা তার এক দৃষ্টান্ত৷ ডাক্তারের লুফটহানসা কোম্পানিকে লুবিৎস-এর মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো উচিত ছিলো৷
বেটিনা গালো এ প্রসঙ্গে টুইটারে লিখেছেন, এখন ডাক্তাররা (কর্মী ও যাত্রীবাহী বিমান কোম্পানি) গোপনীয়তার নিয়মের আড়ালে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ তাঁর প্রশ্ন, যাত্রীদের স্বার্থের কি কোনো দাম নেই?
এমন মানসিক অবস্থা নিয়ে আন্দ্রেয়াস লুবিৎস কী ভাবে যাত্রীবাহী বিমানের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক পিয়ার্স মরগ্যান৷
অন্যদের মতে, এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আরও ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন আছে৷ শুধু আবেগের বশে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না৷
পেশাদারি পাইলট ও প্রশিক্ষক রন ব়্যাপ জার্মানউইংস-এর ঘটনার জের ধরে রাজনীতিকদের ‘কিছু একটা করা'-র তাগিদের আশঙ্কা করছেন এবং এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন৷
কো-পাইলটকে ঘিরে এত বিতর্কের মাঝে মূল পাইলটের স্মৃতি জাগিয়ে রাখতে চান মাইকেল মার্টেন৷ তিনি ফ্লাইট ক্যাপ্টেন পাট্রিক সন্ডহাইমার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন৷
আন্দ্রেয়াস লুবিৎস-কে ঘিরে সংবাদ মাধ্যমের উন্মাদনার ফলে প্রতিবেশীদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে৷ মন্টাবাউর শহরে লুবিৎস-এর পরিবারের এক প্রতিবেশী তাই বাড়ির দরজার সামনে বড় করে একটি কাগজ ঝুলিয়ে দিয়েছেন৷ তাতে লেখা আছে – দয়া করে বেল বাজাবেন না, শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে৷ সেই ছবিটি তুলেছেন সাংবাদিক হ্যারিয়েট টোরি৷
সংকলন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: জাহিদুল হক