ব্রেক্সিটের পরেও চ্যালেঞ্জের মুখে ব্রিটেন
২৮ জানুয়ারি ২০২০আগামী শুক্রবার ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে চলেছে৷ তবে ইইউ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হতে আরও সময় লাগবে৷ চলতি বছরের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করতে চান ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ তবে মাত্র এগারো মাসের মধ্যে বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ে ইইউ-র সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ঘোর সংশয় দেখা দিয়েছে৷ বিষয়টিকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে সোমবার উত্তর আয়ারল্যান্ড সফরে গিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যে ইইউ কোনো অবস্থায় একক বাজারের অখণ্ডতা নিয়ে আপোশ করবে না৷ তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘নেভার, নেভার, নেভার৷'' তাঁর মতে, ব্রিটেন এতকাল ব্রেক্সিটের ব্যয়ভারকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় নি৷ এবার সেই বাস্তবের মুখোমুখি হবার সময় এসে গেছে৷ একক বাজার ও শুল্ক এলাকা ত্যাগ করলে তার পরিণাম ভোগ করতে হবে৷ উল্লেখ্য, ব্রিটেনের কিছু রাজনীতিক সম্প্রতি ব্রাসেলসের কাছ থেকে ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নানারকম ছাড়ের আশা প্রকাশ করেছেন৷ বার্নিয়ে সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন৷
ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে ইইউ যতটা সম্ভব নমনীয় হবার চেষ্টা করলেও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আর আগের মতো অবাধ হতে পারবে না৷ বরিস জনসন চলতি বছরেই এই আলোচনা শেষ করার যে অঙ্গীকার করেছেন, সেই সময়সীমা মোটেই বাস্তবসম্মত নয় বলে ইইউ কর্মকর্তারা বার বার সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ তা সত্ত্বেও জনসন সময়সীমা বাড়াতে প্রস্তুত না হলে কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রিটেন ইইউ বাণিজ্য ও শুল্ক কাঠামো ছেড়ে বেরিয়ে যাবে৷
আরেকটি বিষয় নিয়েও ধোঁয়াশা কাটছে না৷ ব্রিটেন ভবিষ্যতে ইইউ-র বিধিনিয়ম কতটা মেনে চলতে প্রস্তুত, সে বিষয়ে জনসনের সরকার এখনো কোনো স্পষ্ট অবস্থান নেয় নি৷ বিশেষ করে ইইউ দেশগুলিতে রাষ্ট্রীয় সাহায্য ও সামাজিক মডেল চালু রয়েছে, সেই কাঠামো ত্যাগ করলে ব্রিটেনের পণ্য প্রবেশের পথে আরও বাধা সৃষ্টি হবে৷ যে কোনো পরিস্থিতিতেই উত্তর আয়ারল্যান্ড সীমান্তে কিছু নিয়ন্ত্রণ চালু করতে হবে বলে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার মনে করেন৷ বরিস জনসন অবশ্য এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন৷
ব্রেক্সিট-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উত্তর আয়ারল্যান্ডেও দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ সোমবার বার্নিয়ে সেখানে আয়ারল্যান্ট-পন্থি শিন ফেন ও ব্রিটেন-পন্থি ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ বার্নিয়ে এক ভাষণে বলেন, উত্তর আয়ারল্যান্ডেই ব্রেক্সিটের সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা যাবে৷ তিনি ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করেন৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)