ব্রেক্সিটের পথে শেষ বড় বাধা দূর হলো
২৩ জানুয়ারি ২০২০অবশেষে সব বাধা দূর করে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে প্রস্তুত৷ বুধবার ব্রিটেনের সংসদের উচ্চ কক্ষ ব্রেক্সিট আইন অনুমোদন করার পর ব্রিটেন ৩১শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ থেকে বিদায় নিতে পারে৷ বৃহস্পতিবারই রানি এলিজাবেথ এই বিলে স্বাক্ষর করতে পারেন৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, ‘‘কোনো কোনো সময়ে মনে হচ্ছিল, যে আমরা হয়তো কখনো ব্রেক্সিটের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছতে পারবো না৷ তবে আমরা সেই অসাধ্যসাধন করেছি৷''
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই হাউস অফ লর্ডস ব্রেক্সিট আইনের খসড়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল৷ তারপর সংশোধনী সহ সেটি হাউস অফ কমন্সে ফেরত পাঠায়৷ কিন্তু বুধবার নিম্ন কক্ষ সেই সংশোধনী বাতিল করে খসড়াটি অপিরবর্তিত রেখে আবার উচ্চ কক্ষে পেশ করে৷ দ্বিতীয় বার আর আপত্তি না করে উচ্চ কক্ষ সেটি মেনে নেয়৷ ফলে ব্রেক্সিটের পর শিশু শরণার্থীদের সুরক্ষা ও ব্রিটেনে বসবাসরত ইইউ নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে উচ্চ কক্ষের উদ্যোগ ব্যর্থ হলো৷
ব্রিটেনে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবার এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে শেষ পদক্ষেপ নিতে হবে৷ আগামী ২৯শে জানুয়ারি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ব্রেক্সিট আইন অনুমোদন করলে ব্রেক্সিট কার্যকর করার পথে আর কোনো বাধা থাকবে না৷
ব্রেক্সিট সংক্রান্ত গণভোটের পর প্রায় তিন বছর ধরে ব্রিটিশ রাজনীতির অচলাবস্থার কারণে ইইউ থেকে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া একের পর এক বাধাক মুখে পড়ছিল৷ টেরেসা মে হাল ছেড়ে বিদায় নেবার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসন আগাম নির্বাচন ডেকে নিজের শক্তি বাড়িয়ে নিয়ে সংসদে যথেষ্ট সমর্থন নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন৷ গত ডিসেম্বরে নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরেই জনসন অবিলম্বে সংসদে ব্রেক্সিট আইন অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছিলেন৷ বুধবার সেই উদ্যোগ সফল হলো৷ এই সাফল্যকে তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে৷
চলতি বছরের শেষেই ইইউ-র সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে বোঝাপড়ার বিষয়ে জনসন অত্যন্ত আশাবাদী৷ বুধবার তিনি আবার বলেন, যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাণিজ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে৷ আগামী মাসের শুরুতে এক ভাষণে জনসন এই চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ ক্যানাডার সঙ্গে ইইউ-র বাণিজ্য চুক্তির আদলেই তিনি ব্রিটেন-ইইউ চুক্তি সম্পর্কে সমঝোতায় আসতে চান৷ তবে ইইউ-র সঙ্গে বাণিজ্যের পথ মসৃণ রেখেও অ্যামেরিকা ও বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের নীতি কতটা সফল হবে, সে বিষয়ে একাধিক মহলে সংশয় দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে এত কম সময়ের মধ্যে বোঝাপড়া সম্পর্কে ইইউ মোটেই এতটা আশাবাদী নয়৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)