ব্রেক্সিট হলেও ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সহজ নয়
১০ জানুয়ারি ২০২০অবশেষে ব্রিটেনের সংসদের নিম্ন কক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের চুক্তি অনুমোদন করেছে৷ বৃহস্পতিবার ৩৩০ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে, ২৩১ জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ আগামী সপ্তাহে উচ্চ কক্ষের অনুমোদন পেলেই আগামী ৩১শে জানুয়ারি ব্রেক্সিট কার্যকর হবে৷ সেখানে আইনের খসড়াটিকে ঘিরে কিছু প্রশ্ন ও সমালোচনার আশঙ্কা থাকলেও অনুমোদনের পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ গত ডিসেম্বর মাসে আগাম নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল হলো৷
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিটের পথে বাধা দূর হলেও এর পরের পদক্ষেপ নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ চলতি বছরের বাকি ১১ মাস ব্রিটেন কার্যত ইইউ সদস্য থেকে যাবে৷ এই অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে বোঝাপড়া শেষ করতে চান প্রধানমন্ত্রী জনসন৷ কিন্তু ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর মতে, এই সময়কালে বড়জোর কিছু প্রধান বিষয়ের নিষ্পত্তি সম্ভব৷ সার্বিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য সময়সীমা আরও দুই বছর পর্যন্ত বাড়াতে হতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷ ইইউ প্রধান মধ্যস্থকারী মিশেল বার্নিয়ে বলেছেন, সবার আগে বাণিজ্য ও নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বোঝাপড়ার বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হবে৷ তবে প্রতিযোগিতার বাজারে ইইউ-র স্বার্থ রক্ষা করেই সেই পথে এগোনো হবে৷
অন্যদিকে বরিস জনসন ১১ মাসের মধ্যেই ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করতে বদ্ধপরিকর৷ এমনকি কোনো বোঝাপড়া সম্ভব না হলেও তিনি এ ক্ষেত্রে কোনো বিলম্ব চান না৷ অন্যান্য দেশ ও জোটের সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে জনসন ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য নতুন সুযোগ খুলে দিতে আগ্রহী৷
চলতি বছরের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বোঝাপড়া সম্ভব না হলে বিশেষ করে ব্রিটিশ অর্থনীতির ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ইইউ-র বাকি ২৭টি দেশের বাণিজ্যের প্রায় নয় শতাংশ ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পন্ন হলেও ব্রিটেনের ৪৩ শতাংশ রপ্তানির গন্তব্য এই দেশগুলি৷ ব্রিটেনের আমদানিরও প্রায় অর্ধেক আসে ইইউ দেশগুলি থেকে৷ সেই বাণিজ্যের উপর শুল্ক চাপানো হলে অর্থনীতির ক্ষতি অনিবার্য৷ এত কম সময়ের মধ্যে অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করে সেই ধাক্কা সামলানো সম্ভব হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)