‘জিএসপি নিয়ে আশাবাদ’
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা নিয়ে মত বিনিময়ের এ সভায় ইথিওপিয়া আর মিয়ানমারও অংশ নিয়েছে৷ তবে আলোচনায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে বলে জানান হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন৷ বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো সম্পর্কে জার্মান ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর এখনকার মনোভাব জানতে চাইলে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘জার্মান ক্রেতাদের যে ১৬ দফা দাবি ছিল, তা আমরা পুরোপুরিই পূরণ করতে পেরেছি৷ ওরা আমাদের কারখানাগুলো পরিদর্শন করে শতকরা মাত্র দুই ভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা পেয়েছে৷ ওই দুই ভাগও আমরা ‘বন্ধ' করেছি৷ আমরা মনে করি, তারা এখন সন্তুষ্ট৷’’
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোতে শ্রমিক মজুরি, কাজের পরিবেশ, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রত্যাশিত উন্নতির ওপরই নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আবার পণ্যের অবাধ বাজার, অর্থাৎ জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার বিষয়টি৷ আগামী ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি কমিটি বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর সার্বিক অবস্থার উন্নতি পর্যবেক্ষণ করবে৷ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মনে করেন, সব ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত উন্নতি সাধন করে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে জিএসপি সুবিধা প্রাপ্তির দাবি জোরালো করতে পেরেছে৷
তিনি বলেন, ‘‘এখন কোনো দেশই জিএসপি পায় না৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার তা নতুন করে শুরু করবে৷ জিএসপি সুবিধা পাওয়ার জন্য যা যা দরকার তা আমাদের আছে৷ তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রেরও একটা ‘অ্যাকশন প্ল্যান' আছে৷ সে অনুযায়ীই আমরা কাজ করেছি৷ তাই সিদ্ধান্তটা এখন তাদের হাতে৷ শ্রমিক ইউনিয়ন, ইপিজেড – এ সব বিষয়ে যা করণীয় ছিল সবই আমরা করেছি৷ শুধু পরিদর্শক নিয়োগ করা হয়নি৷'' পরিদর্শক নিয়োগের অগ্রগতি সম্পর্কে হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে৷ আশা করছি অক্টোবরের মধ্যে এ কাজও শেষ করতে পারবো৷''
তবে হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন মনে করেন, পরিদর্শক নিয়োগের বিষয়টির জন্য জিএসপি সুবিধা প্রাপ্তি আটকে থাকার কথা নয়৷ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত পোশাক কারখানা পরিদর্শন জোট ‘অ্যালায়েন্স' এবং ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট ‘অ্যাকর্ড'-এর চলমান তৎপরতার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ পরিদর্শক নিয়োগ না করা বড় কোনো সমস্যা নয়, কেননা, পরিদর্শকের চেয়েও বড় ‘থার্ড এজেন্সিজ' এখন কারখানাগুলো পরিদর্শন করছে৷ তারা বলেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সবকিছু শতকরা ৯৮ ভাগ আন্তর্জাতিক মানে রয়েছে৷''
কয়েকদিন পরেই ঈদ-উল আজহা৷ বাংলাদেশের অনেক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি এবং উৎসব বোনাস পাবেন কিনা – এ নিয়ে যথারীতি সংশয়ে আছেন৷ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন আশা প্রকাশ করেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার ফলস্বরূপ কারখানা মালিকরা এই ঈদে শ্রমিকদের সমস্ত প্রাপ্য যথাসময়ে বুঝিয়ে দেবেন৷
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ