শর্ত পূরণের প্রতিবেদন
৪ এপ্রিল ২০১৪তাজরীন ফ্যাশানস-এ আগুন এবং রানা প্লাজা ধসে মোট ১,৩৪২ জন পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর পর জিএসপি গত বছরের ২৭শে জুন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কখনোই জিএসপি সুবিধা না পেলেও পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়েই জিএসপি স্থগিত হয়৷ আর আগামী মাসে সিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার বিষয়টি পূনর্মূল্যায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্র৷
যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি ফিরে পেতে ১৬টি শর্ত দিয়েছে৷ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, ‘‘শর্তগুলো বাংলাদেশ আন্তরিকতার সঙ্গে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করে যাচ্ছে৷ তাঁর মতে, এরই মধ্যে ১৩টি শর্ত পূরণ করা হয়েছে৷ ১৫ই এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি অগ্রগতি রিপোর্ট দেয়া হবে৷'' তিনি আশা করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাস্তব অবস্থা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেবে৷
বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ও শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ চলতি মাসের মধ্যে এ কমিটি গঠন করা হবে৷ যেখানে উভয় পক্ষের যে কোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে৷''
এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী আশা করলেও এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি৷ আর মার্চের শুরুতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেছেন, জিএসপি ফিরে পেতে বাংলাদেশকে আরো কাজ করতে হবে৷ গত মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রীর দেখা দেখা করে জিএসপি নিয়ে কথা বললেও মার্কিন দূত জিএসপি-র বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি৷
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১৬টি শর্তের মধ্যে মূল ৩টি শর্ত – শ্রমিক নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ এবং ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে ভাল কোনো অগ্রগতি নেই৷ আর ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী অ্যালান ডানকানও বাংলাদেশ সফরে এসে বুধবার পোশাক কারখানার সার্বিক পরিস্থিতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ক্রাইমিয়া এবং উপজেলা নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ইস্যু৷ তাই এ যাত্রায় আপাতত জিএসপি ফিরে পাওয়ার আশা করা যায়না৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘তানজানিয়ার জিএসপি ফিরে পেতে ৭ বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল৷ আর জিএসপি ফিরে পাওয়ার সেটিই সবচেয়ে কম সময়ের রেকর্ড৷ তাই বাংলাদেশ কত দিনে ফিরে পায় সেটিই এখন দেখার বিষয়৷''