1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতায় ফের শিক্ষক নিগ্রহ

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শিক্ষকের ঘরে ঢুকে নিগ্রহ করা হলো কলকাতার শতাব্দীপ্রাচীন সায়েন্স কলেজে৷ অভিযুক্ত ছাত্র শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা৷ ইতিমধ্যেই ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2smwD
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
ছবি: Abp Photo/Sudipta Bhowmick

আগেও ছিল৷ তবে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর দিকে দিকে শিক্ষকনিগ্রহের ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ সর্বশেষ ঘটনা রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে৷ গত ৬ ফেব্রুয়ারি শতাব্দীপ্রাচীন সায়েন্স কলেজে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ভাস্কর দাসের ওপর গৌরব দত্ত নামে এক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা চড়াও হয় বলে অভিযোগ৷ শিক্ষকের ঘরে ঢুকে অভিযুক্ত ছাত্র চড় থাপ্পর মারে বলে অভিযোগ৷ ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে ঘটনার নিন্দা এবং প্রতিবাদ করা হয়৷ অবিলম্বে ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করার দাবিও ওঠে৷ যদিও পুলিশ ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করেনি৷ পরে আদালতে আত্মসমর্পন করে ওই ছাত্র জামিন পেয়ে যান৷

স্বাভাবিকভাবেই ঘটনার প্রতিবাদ করে বিরোধীদল সিপিএম৷ সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ভাস্কর দাসের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন৷ ঘটনার প্রতিবাদে সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে একটি সভাও করার কথা৷ সেখানে ভাস্কর দাসকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷

এদিকে ঘটনার নিন্দা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও৷ যদিও তাঁর বক্তব্য, ‘‘শিক্ষকেরা গুরুজন৷ তাঁদের উপর চড়াও হওয়া সবসময়ই অন্যায়৷ কিন্তু শিক্ষকেরই বা রাজনৈতিক রং থাকবে কেন?'' সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে ভাস্করবাবুর জড়িত থাকার বিষয়টিকেই চিহ্নিত করেছেন তিনি৷ তা শুনে রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদেরা বলছেন, বটেই তো! শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কের মাঝে কখনোই রাজনীতির রং থাকা উচিত নয়৷ কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তির মুখে কি এ কথা সাজে?

বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্র রাজনীতিমুক্ত তো হয়ইনি, বরং তার প্রকোপ আরো বেড়েছে৷ অথচ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার সময় বলেছিলেন, শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত করা হবে৷ সিপিএমের সময় নিয়োগ থেকে ছাত্র সংসদ সর্বত্র যে শাসকদলের ছায়া পড়েছিল,তার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তার কিছুই ঘটেনি৷ বরং উল্টোটাই ঘটেছে৷ নিন্দকেরা বলছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন বলেন, কেন শিক্ষকের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক থাকবে, তখন তিনি ভুলে যান, শিক্ষকদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হন তৃণমূলনেত্রী৷ শুধু তাই নয়, মঞ্চে হাজির থাকেন একাধিক তৃণমূলের নেতা৷ অর্থাৎ, শিক্ষকদের শাসকদলের অনুগত করার চেষ্টা জারি আছে৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গাত্রদাহ হচ্ছে, কারণ, আক্রান্ত শিক্ষক শাসকদলের সংগঠন করেন না৷ সে কারণেই সম্ভবত রাজনীতির প্রসঙ্গ তিনি তুলছেন৷

পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত করার দাবি তুলেছেন একাধিক শিক্ষাবিদ৷ সাম্প্রতিক ঘটনার পর আবারো সরব হয়েছেন তাঁরা৷