হংকংয়ে একদিনে গ্রেফতার ৩০০
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ফের অশান্ত হংকং। চীনের বিশেষ আইন লঙ্ঘন করে রোববার বহু মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। নির্বাচন বাতিল করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা আন্দোলনে নামেন। প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হংকংয়ের পুলিশ বিভাগ নিজেরাই টুইট করে এ খবর জানিয়েছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে, গ্রেফতার নয়, প্রতিবাদীদের আটক করা হয়েছে।
এ মাসেই হংকংয়ের লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এই অ্যাসেম্বলিতে ৫০ শতাংশ প্রতিনিধি জনগণের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত হন। বাকি ৫০ শতাংশ মনোনীত। মনোনীত প্রার্থীরা অধিকাংশই চীনের কমিউনিস্ট শাসকদের অনুগত। তবে গণতন্ত্রপন্থীদের ধারণা ছিল, ভোট হলে বাকি ৫০ শতাংশ আসনের অধিকাংশই তাঁদের দখলে আসত। বস্তুত, ভোট হলে ক্ষমতা যে গণতন্ত্রপন্থীদের দিকে চলে যাবে, তা বুঝতে পারছিলেন বর্তমান শাসকরাও। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সে কারণেই ভোট আগামী বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, করোনার জন্যই এ কাজ কাজ করা হয়েছে।
গণতন্ত্রপন্থীদের বক্তব্য, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হংকংয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৬০০। অন্য দেশের তুলনায় যা কোনও সংখ্যাই নয়। এই পরিস্থিতিতে করোনার জন্য ভোট পিছিয়ে দেওয়া কোনও যুক্তি হতে পারে না। সে কারণেই রোববার বিশাল অংশের মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে রাস্তায় নামেন। কিছু দিন আগেই হংকংয়ে চীন বিশেষ আইন চালু করেছে। যে আইনের বলে সমস্ত বিক্ষোভ আন্দোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একের পর এক প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করছে পুলিশ। রোববারেও আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, কোনও কোনও জায়গায় আন্দোলনকারীদের হঠাতে গোলমরিচের বল ছোড়া হয়। বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্রপন্থী নেতা রোববার গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
২০১৯ সাল থেকে চীনের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করছে হংকং। তাদের বক্তব্য, ১৯৮৪ সালের চুক্তি লঙ্ঘন করছে চীন। যুক্তরাজ্যের থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পরে হংকংয়ের দায়িত্ব নেয় চীন। কিন্তু হংকংকে বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়। বাণিজ্য এবং গণতন্ত্রের বিষয়ে চীনের চেয়ে অনেকটাই আলাদা হংকং। পশ্চিমের সঙ্গে তাদের মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি ছিল। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে গণতন্ত্রে আঘাত হানছে চীন, এই অভিযোগে আন্দোলন শুরু করে হংকং। আন্দোলন এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে দমনমূলক নীতি গ্রহণ করে চীন। কিছুদিন আগে তারই জেরে নতুন আইন বলবৎ হয়েছে। কিন্তু কোনও আইনই হংকংয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন বন্ধ করতে পারছে না। বরং, দিন যত যাচ্ছে, আন্দোলনের শক্তি তত বাড়ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)