চিকিৎসায় চুম্বকের ব্যবহার!
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় এক কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ সেপসিসে আক্রান্ত হয়৷ এর মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ রোগী মারা যায়৷ জার্মানিতে প্রতিবছর ৬০ হাজার মানুষ এই রোগে মারা যায়৷ সেপসিসে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা মাত্র ৫০ শতাংশ৷
এই রোগে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক সহ অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়ে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রমণ করার চেষ্টা করে৷ বিজ্ঞানীরা রক্ত থেকে এসব ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও বিষাক্ত পদার্থ বের করতে চুম্বকের ব্যবহার নিয়ে কাজ করছেন৷ ইঁদুরের উপর করা এই পরীক্ষায় তাঁরা সফলও হয়েছেন৷ গবেষণাটি সম্প্রতি ‘নেচার মেডিসিন' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে৷
বিজ্ঞানীরা একটি ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন যেটা রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে আনতে চুম্বক বা ম্যাগনেট ব্যবহার করে৷ অনেকটা আমাদের শরীরের অঙ্গ প্লীহা-র মতো কাজ করা এই ডিভাইসটি মান্নান-বাইন্ডিং লেকটিন বা এমবিএল (এটি একটি জেনেটিক্যালি-ইঞ্জিনিয়ার্ড হিউম্যান ব্লাড প্রোটিন) মেশানো ম্যাগনেটিক ন্যানোবিডস ব্যবহার করে৷ গবেষকরা ডিভাইসটির নাম দিয়েছেন ‘বায়ো-স্প্লিন'৷
গবেষক দলের একজন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডোনাল্ড ইঙ্গবার বার্তা সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, এবোলা (উচ্চারণভেদে ইবোলা) ভাইরাসের সঙ্গে এমবিএল প্রোটিনের সম্পর্ক থাকায় এবোলা প্রতিরোধেও হয়ত এটা কাজে লাগানো যেতে পারে৷
এমবিএল-এর সঙ্গে মারবুর্গ ও এইআইভি ভাইরাসেরও সম্পর্ক থাকতে পারে৷ সেক্ষেত্রে ঐ সব ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসায়ও বায়ো-স্প্লিন ব্যবহার করা যেতে পারে৷
তবে গবেষক ইঙ্গবার জানিয়েছেন তাঁদের গবেষণাটি এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র ইঁদুরের উপরই করা হয়েছে৷ ভবিষ্যতে এটা আরও বড় কোনো প্রাণী এবং তারপর মানুষের দেহে করা হবে৷ ফলে রোগের চিকিৎসায় বায়ো-স্পিলের ব্যবহার হওয়া পর্যন্ত কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি)