সংঘাত এবং ট্রাম্প
৫ এপ্রিল ২০১৮সংঘাত ছাড়া প্রায় একটি দিনও কাটছে না ট্রাম্প প্রশাসনের৷ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের পাশাপাশি প্রতিবেশী মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে বচসা তুঙ্গে উঠেছে৷ এখনো পর্যন্ত ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারেননি৷ অবৈধ অভিবাসন রুখতে মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তৈরি করতে না পেরে আপাতত ন্যাশানাল গার্ড বাহিনী মোতায়েন করতে চান তিনি৷
মেক্সিকোর দক্ষিণের কয়েকটি দেশের প্রায় ১,০০০ আশ্রয়প্রার্থী মেক্সিকো পেরিয়ে দলবদ্ধভাবে অ্যামেরিকায় অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, এমন একটি খবর শুনে ক্রুদ্ধ ট্রাম্প এই ঘোষণা করেন৷ তিনি বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি সংকটের আকার নিয়েছে৷ তাঁর মতে, সেখানে আইনের শাসনের অভাব অ্যামেরিকার নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষতি করছে৷ এ প্রসঙ্গে তিনি পূর্বসূরি ওবামা প্রশাসনেরও সমালোচনা করেন৷
প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় দক্ষিণের রাজ্যগুলির গভর্নরদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সীমান্তে ন্যাশানাল গার্ড বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তবে আচমকা এমন নির্দেশ পালন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে৷
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকেই আশ্রয়প্রার্থীরা বছরে একবার দলবদ্ধভাবে ‘ক্যারাভান' হিসেবে মার্কিন সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়৷ নিজেদের করুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতেই এই অভিযান চালানো হয়৷ দলের নেতারা বুধবার বলেছেন, প্রায় ৮০ শতাংশ আশ্রয়প্রার্থী আপাতত মেক্সিকোয় থেকে যাবে৷
বলা বাহুল্য, এই ঘোষণার পর মেক্সিকোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ সে দেশের সংসদে দলমতনির্বিশেষে একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে৷ তাতে সরকারের উদ্দেশ্যে অভিবাসন ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান লাউরা রোহাস বলেন, শুরু থেকেই লাগাতার তর্জনগর্জন করে ট্রাম্প মেক্সিকোর প্রতি অশ্রদ্ধা ও অপমানজনক আচরণ করে চলেছেন৷ কিছু ভুল ধারণা ও ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে তিনি একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছেন৷
সংসদের এই প্রস্তাব কার্যকর করার কোনো বাধ্যবাধকতা সরকারের নেই৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তে পরিকল্পনার বিষয়ে মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে৷ সীমান্তে সামরিকীকরণ হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিশাল ক্ষতি হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মেক্সিকো৷ মেক্সিকোর সরকার ‘ক্যারাভান' নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘মাত্রাতিরিক্ত' প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেছে, নভেম্বর মাসে সে দেশের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের ভরাডুবি এড়াতেই ট্রাম্প এমন তর্জনগর্জন করছে৷
মেক্সিকোয় আগামী ১লা জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ সব রাজনৈতিক শিবিরই ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণ নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছে৷ শাসক দলের প্রার্থী হোসে আন্টোনিও মেয়াডে সব প্রার্থীর উদ্দেশ্যে সীমান্তের প্রশ্নে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)