ট্রাম্পের হুমকির জবাব
২০ মার্চ ২০১৮‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নীতির পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তি, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এতকাল তাঁর দেশের প্রতি অবিচার করা হয়েছে৷ তাই মুক্ত বাণিজ্যের তকমা সরিয়ে অ্যামেরিকার স্বার্থে প্রয়োজনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ চাপাতে হবে৷ ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ম আমদানির উপর শুল্ক চাপানোর পর এবার তিনি অ্যামেরিকার মেধাসত্ত্ব ‘চুরি' বন্ধ করতে চীনের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷
চীনে ব্যবসা করার পূর্বশর্ত হিসেবে মার্কিন কোম্পানিগুলিকে অনেক অভ্যন্তরীণ তথ্য ও মেধাসত্ত্ব সংক্রান্ত তথ্য হস্তান্তর করতে হয় বলে এতকাল অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল৷ তার বদলা নিতে সে দেশ থেকে আমদানির উপর প্রায় ৩,০০০ কোটি ডলারের শুল্ক চাপানোর প্রস্তাব এসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্য থেকে৷ ট্রাম্প নিজে এই অঙ্ক আরও বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেশিয়াং আবেগ বশে এনে দুই দেশের বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানোর ডাক দিয়েছেন৷ কারণ, এমন যুদ্ধে কারো জয় হবে না৷ আবেগের বদলে যুক্তির ভিত্তিতে দুই পক্ষ অগ্রসর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷ লি আশ্বাস দিয়েছেন, যে চীন কড়া হাতে মেধাসত্ত্ব রক্ষা করবে৷ এ প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন যে, চীন বিদেশি কোম্পানিগুলির জন্য বাজার আরও উন্মুক্ত করবে এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থের মতো পরিষেবা ক্ষেত্রে নিয়মকানুন আরও শিথিল করবে৷ তাছাড়া উৎপাদন ক্ষেত্রও পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে৷ প্রযুক্তি হস্তান্তরের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না৷ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার প্রশ্নেও প্রধানমন্ত্রী লি নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছেন৷
চীনের সঙ্গে লাভজনক বাণিজ্যের পথে নানা বাধা সম্পর্কে এতকাল অভিযোগ করে এসেছে অ্যামেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশ৷ কিন্তু চীনের বিরুদ্ধে এতকাল জোরালো পদক্ষেপের সাহস দেখায় নি কোনো দেশ৷ ডোনাল্ড ট্রাম্প তর্জনগর্জন করে চীনের নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারলে অনেক দেশই উপকৃত হবে৷ কিন্তু গোটা বিষয়টি সংঘাতের পথে এগোলে সামগ্রিকভাবে বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষতির বিপুল আশঙ্কা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা৷