লড়াই হবে রাজ্যের বিরুদ্ধেও
৯ ডিসেম্বর ২০১৯তৃণমূল কংগ্রেস যতদিন পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আছে, নাগরিক পঞ্জিকরণ বা এনআরসি এবং সোমবারই সংসদে পেশ হওয়া প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, বা সিএবি রাজ্যে চালু হতে দেওয়া হবে না৷ খড়গপুরে তাঁর দলের সাম্প্রতিক নির্বাচনি সাফল্যের উদযাপন সভায় সোমবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ বললেন, তাঁরা থাকতে এই দেশের একজন নাগরিককেও উদ্বাস্তু হতে দেওয়া হবে না৷
মূলত এনআরসিবিরোধিতার হাওয়াতেই পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া তিনটি উপনির্বাচনে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এবং বিজেপি শুধু হারেইনি, এনআরসি নিয়ে তারা এখন কার্যত ব্যাকফুটে৷ কিন্তু মমতা, বা তাঁর দল এনআরসিবিরোধী মনোভাবকে নিজেদের রাজনৈতিক এবং নির্বাচনি সাফল্যের পক্ষে কাজে লাগালেও ‘ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার', বা এনপিআর নিয়ে নীরব রয়েছেন কেন? প্রশ্ন উঠলো সোমবার, কলকাতায় এনআরসিবিরোধী যৌথ মঞ্চের সভায়৷ একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের যে সঙ্ঘবদ্ধ সমাবেশে এদিন হাজির ছিলেন সিপিআই নেতা এবং দেশের যুব আন্দোলনের অন্যতম মুখ কানহাইয়া কুমার৷
মমতা ব্যানার্জি এদিন খড়গপুরের সভায় বলেছেন, এনআরসি এবং সিএবি একই মুদ্রার দুপিঠ৷ যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রসেনজিৎ বসুর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে তিনি একইভাবে এনপিআরকে অস্বীকার করছেন না কেন? এটা দ্বিচারিতার শামিল৷ মমতা এবং সরকার যদি এনপিআর নিয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার না করে, তা হলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামবে যৌথ মঞ্চ৷''
আপাতত ‘পাহাড় থেকে সাগর' নামে এনআরসি, সিএবি নিয়ে এক সচেতনতা পদযাত্রা করছে যৌথ মঞ্চ৷ যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়৷ পথসভা করছে৷ এবং সেটা করতে গিয়ে মঞ্চের কর্মীদের অভিজ্ঞতা হলো, একেক জায়গায় মানুষ তাঁদের কাছ থেকেই প্রথম শুনছেন নাগরিকত্ব নিয়ে এই বিতর্কের কথা৷ তুলনায় বেশি সচেতন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো৷ যেহেতু উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে ওই অঞ্চলের যোগাযোগ বেশি৷ আসামে এনআরসি চালু করার প্রভাব উত্তরবঙ্গেও এসে পড়ছে৷ তেমনই সচেতন কলকাতা শহর এবং শহরতলী৷ কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের অনেক জায়গাতেই মানুষ এখনো সচেতন নন আসন্ন বিপদ সম্পর্কে৷