যত কফি তত আয়ু
১৫ জুলাই ২০১৭কফি শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এমন ধারণা চালু আছে অনেকেরই মাঝে৷ কিন্তু সাত লাখ মানুষের ওপর চালানো দু'টো গবেষণা তা ভুল প্রমাণ করেছে৷ দীর্ঘমেয়াদি এই গবেষণাগুলোতে দেখা যায়, কফি পান অনেক রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়, বিশেষ করে সঞ্চরণশীল ও গ্যাস্ট্রো-ইন্টেসটাইনাল রোগগুলোর ক্ষেত্রে৷
‘ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার' এবং ‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন'-এর গবেষণাটিতে কফি পানের অভ্যাস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি তুলনা করা হয়৷ যেমন ইটালিতে কেউ হয়ত এসপ্রেসো পছন্দ করেন, আবার লন্ডনে কেউ কাপুচিনোর ওপর চড়ে বসেছেন৷ গবেষকরা ইউরোপের দশটি দেশের ৫ লাখেরও বেশি মানুষের ওপর এই গবেষণাটি করেন৷
দ্বিতীয় গবেষণাটিতে বিভিন্ন জাতি, তাদের জীবন পদ্ধতি ও রোগের ঝুঁকির সঙ্গে কফির সম্পর্ক নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়৷ সাদা অ্যামেরিকান, আফ্রিকান-অ্যামেরিকান, জাপনিজ-অ্যামেরিকান এবং ল্যাটিনোদের মধ্যে করা এই গবেষণায় দেখা যায়, এদের মধ্যে যারা দিনে অন্তত এক কাপ কফি খান, তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি যারা কফি খান না তাদের চেয়ে ১২ ভাগ কম৷ ইউনিভার্সিটি সাউথ ক্যারোলাইনা এই গবেষণাটি করেছে৷ গেল সোমবার গবেষণা দু'টি ‘অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন'-এ প্রকাশিত হয়েছে৷
দু'টো গবেষণাতেই দেখা যায়, দিনে তিন কাপ বা তার চেয়ে বেশি কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে সবচেয়ে ভালো৷ সেক্ষেত্রে কফিটি ক্যাফেইনসহ না মুক্ত তাতে কিছু আসে যায় না৷ কফিতে প্রায় ১,০০০ রাসায়নিক পদার্থ আছে৷ ক্যাফেইন ছাড়াও এতে আছে পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে এমন আরো যৌগ, যেগুলো শরীরের জন্য উপকারী৷ ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকদের মতে, কফিপানকারীদের লিভার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি৷ তবে কফির ঠিক কোন উপাদানটি স্বাস্থ্যসুরক্ষায় এমন অবদান রাখছে, তা এখনো বের করতে পারেননি গবেষকরা৷
১৬ বছর ধরে চলা এই গবেষণায় যদিও দেখা গেছে কফি পানে স্বাস্থ্য সুবিধা পেয়েছেন অনেকেই৷ গবেষকরা অবশ্য এমন গ্যারান্টি দিচ্ছেন না যে, কফি খেলেই কারো স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে৷ তবে কে জানে, গবেষণার ফল দেখে কফি পাগলরা হয়ত আরেকবার তাদের খালি মগ ভর্তি করে নিয়েছেন৷
ব্রিগিটে অস্টেরাথ/জেডএ