1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্ট্রেস দূর করতে কফি কতটা উপযুক্ত?

মার্টিন রিবে/এসবি১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সিনেমায় প্রায় গোয়েন্দা সহ অনেক চরিত্রকে স্ট্রেস কমাতে কফি ও সিগারেট খেতে দেখা যায়৷ সিগারেটের ক্ষতিকারক প্রভাব স্পষ্ট হয়ে গেলেও কফির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে৷ ক্যাফেইনকে বশে আনতে কাজ করছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/1GVy1
Tasse Kaffee Latte
ছবি: picture alliance/All Canada Photos

স্ট্রেস দূর করতে কফি কতটা উপযুক্ত?

স্ট্রেস বা মানসিক চাপ মানুষকে অসুস্থ করে তোলে৷ সহকর্মীদের সঙ্গে রোজকার বাকবিতণ্ডা, অথবা কম সময়ের মধ্যে একের পর এক কাজ শেষ করার চাপ থাকলে তো কথাই নেই৷ এর পরিণাম মোটেই ভালো হয় না৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টা ম্যুলার বলেন, ‘‘ধারাবাহিক স্ট্রেস মানসিক বিষাদ ও ভয়ের জন্ম দেয়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা চলে যায়, ভাবনাচিন্তা অস্পষ্ট হয়ে পড়ে৷ এগুলিই ক্রনিক স্ট্রেস-এর সরাসরি প্রভাব৷ মানুষ ও জীবজন্তু – দুইয়ের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়৷''

স্ট্রেস দেখা দিলে অনেকে প্রচুর কফি খান৷ কফি মন চাঙ্গা করে এবং স্মৃতিশক্তি জোরদার করে৷ সেইসঙ্গে ক্যাফেইন সম্ভবত স্ট্রেস-এর প্রভাব কমিয়ে দেয়৷

Symbolbild Überarbeitung Urlaubsreif Frustration am Arbeitsplatz Arbeitsplatz Schreibtisch
সহকর্মীদের সঙ্গে রোজকার বাকবিতণ্ডা, অথবা কম সময়ের মধ্যে একের পর এক কাজ শেষ করার চাপ...ছবি: Colourbox

অধ্যাপক ক্রিস্টা ম্যুলার এক আন্তর্জাতিক গবেষক দলের সঙ্গে মিলে পরীক্ষা চালিয়েছেন৷ তাঁদের সূত্র অনুযায়ী, ক্যাফেইন মস্তিষ্কে এমন এক ক্রিয়া বন্ধ করে দেয়, যা শরীরে বিভিন্ন রকম স্ট্রেসের লক্ষণ ছড়িয়ে দেয়৷ সেই ক্রিয়া বন্ধ হলে স্ট্রেসের লক্ষণও দূর হয়৷ ইঁদুরের ক্ষেত্রে হাতেনাতে ফল পাওয়া গেছে৷ অধ্যাপক ম্যুলার বলেন, ‘‘ইঁদুরগুলি আবার স্বাভাবিক হয়ে পড়ে৷ তাদের মধ্যে স্ট্রেসের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি৷ তারা আরও ভালো করে চিন্তা করতে পেরেছে, নাটকীয় উন্নতি ঘটেছে৷ ভয় ও বিষাদও দূর হয়েছে৷ আমাদের ধারণা, মানুষের ক্ষেত্রেও এর প্রয়োগ সম্ভব৷ ক্যাফেইন যে বিষাদ দূর করে ও চিন্তায় স্বচ্ছতা আনে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷''

স্ট্রেস সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি ঘটেছে৷ ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা শরীরের সেই প্রক্রিয়া শনাক্ত করতে পেরেছেন, যা স্ট্রেসের লক্ষণ ছড়িয়ে দেয়৷ তখন মস্তিষ্কের মধ্যে অত্যন্ত জটিল বায়ো-কেমিক্যাল প্রক্রিয়া ঘটে৷

অ্যাডেনোসিন নামের এই পদার্থ মস্তিষ্কের কোষের একটি অংশে জুড়ে যায়৷ ক্যাফেইন সেই পদার্থ চেপে দিলে স্ট্রেসের লক্ষণ দূর হয়৷ রিসেপ্টরের কাছে পৌঁছানোর দৌড়ে ক্যাফেইনের জয় হয়৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ডমিনিক টিম বলেন, ‘‘রিসেপ্টর অ্যাডেনোসিনের বদলে ক্যাফেইনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বৈকি৷ প্রায় একই জায়গায় সেটা ঘটে৷ একবার ক্যাফেইন যুক্ত হলে অ্যাডেনোসিন আর যুক্ত হতে পারে না৷ অর্থাৎ স্ট্রেস সংকেত তখন কার্যত দূর হয়ে যায়৷''

তবে বেশি মাত্রায় ক্যাফেইন অপ্রিয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে৷ ঘুম কম হয়, বার বার টয়লেটে যাবার প্রয়োজন পড়ে, রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে৷ বিজ্ঞানীরা তাই এমন এজেন্ট খুঁজছেন, যা ক্যাফেইনের মতো স্ট্রেস থেকে সুরক্ষা দেয় বটে, কিন্তু যার এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই৷ অধ্যাপক ম্যুলার বলেন, ‘‘একদিকে রয়েছে ক্যাফেইন৷ পদার্থ হিসেবে ক্যাফেইনের প্রভাব আসলে বেশ দুর্বল৷ তাছাড়া এর এমন কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেগুলি আমরা চাই না৷ তাই আমরা আরও অনেক শক্তিশালী এক পদার্থ তৈরির কথা ভাবি৷ সেটা আমরা করতে পেরেছি৷ এমন এক রেসিডিউ এখানে ঢুকিয়ে দিয়েছি, যা ফ্যাট পছন্দ করে৷ তখন তার অণু কয়েক হাজার গুণ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে৷ এই রেসিডউ-এর মাপ রিসেপ্টরের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়৷ তাই খুব সহজেই এবং ভালোভাবে তা যুক্ত হতে পারে৷''

নতুন এই পদার্থ মানুষের স্ট্রেস ও তার পরিণতির চিকিৎসার উপযুক্ত কিনা, রোগীদের উপর প্রাথমিক পরীক্ষা চালিয়ে তা দেখতে হবে৷ ততদিন পর্যন্ত স্ট্রেস কমাতে ক্যাফেইনের উপরই নির্ভর করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য