মিয়ানমারে উপনির্বাচনে অংশ নেবেন সু চি
১৮ নভেম্বর ২০১১মিয়ানমারের গণতন্ত্রের মানসকন্যা অং সান সু চি৷ তাঁর গণতন্ত্রের দাবিকে ধামাচাপা দিতে দীর্ঘ চেষ্টা চালিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক শাসক গোষ্ঠীরা৷ জীবনের দীর্ঘ সময় তাই গৃহবন্দি ছিলেন সু চি৷ বছরখানেক আগে মুক্তি পান তিনি৷
গত বছর নভেম্বরে মিয়ানমারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)৷ মূলত সু চিকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দেওয়ায় সেই নির্বাচন বর্জন করে এনএলডি৷ তবে শুক্রবার এক চমকপ্রদ ঘোষণা করলেন অং সান সু চি৷ এনএলডি'র একশ শীর্ষস্থানীয় সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর সু চি সেদেশের আসন্ন উপনির্বাচনে তাঁর দলের অংশ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন৷ এখনও অবশ্য উপনির্বাচনের দিন তারিখ কিছু ঘোষণা করা হয়নি৷ তবে মিয়ানমারের সংসদের ৪৮টি শূন্য আসনে ভবিষ্যতে উপনির্বাচনে অংশ নেবে এনএলডি৷
এক বিবৃতিত সু চি'র দল জানিয়েছে, আমরা সর্বসম্মতভাবে এনএলডিকে পুনরায় রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ এবং আমরা আসন্ন উপনির্বাচনেও অংশ নেব৷
বলা বাহুল্য, এনএলডি ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে৷ কিন্তু সেদলকে ক্ষমতা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি৷ এনএলডি নেতা সু চিকেও তখন গৃহবন্দি করে রাখা হয়৷ বছরখানেক আগে মুক্তি পান তিনি৷ এরপর শুরু হয় মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এনএলডি'র নানাবিধ আলোচনা৷
মিয়ানমারের বর্তমান সরকার অবশ্য সু চি'র দলের প্রতি খানিকটা নমনীয়তা প্রদর্শন শুরু করেছে৷ নির্বাচনী আইনের যেসব ধারা সু চির জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিল, সেগুলোকে পরিবর্তন করা হয়েছে৷ তিনশোরও বেশি রাজবন্দিকে মু্ক্তিও দিয়েছে সরকার৷ গত আগস্ট মাসে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন সু চির সঙ্গে একান্তে কথা বলেন, যার সুফল ফলছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনকে আগামী মাসে মিয়ানমার সফরে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে সেদেশ৷ এই ঘোষণার আগে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সরাসরি সু চি'র সঙ্গে কথা বলেছেন৷ মিয়ানমারের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে অগ্রগতির ইঙ্গিত হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন ওবামা৷
উল্লেখ্য, হিলারি ক্লিন্টনের মিয়ানমার সফর হবে গত পঞ্চাশ বছরে সেদেশে কোন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং সাবেক জান্তা সরকারের সদস্যদের অ্যামেরিকা ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রেখেছে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক