1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বিপদের সময় অ্যামেরিকা বন্ধুদের ত্যাগ করে'

৮ অক্টোবর ২০১৯

সিরিয়ায় তুরস্কের হামলার হুমকির মুখে সৈন্য সরিয়ে ফেলে ট্রাম্প প্রশাসন দেশে-বিদেশে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ ট্রাম্প নিজে তুরস্ককে হুমকি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3QryF
USA Washington Donald Trump
ছবি: picture-alliance/Captital Pictures/MPI/RS

বিদেশের মাটিতে মার্কিন সৈন্য পাঠানো বা মোতায়েন রাখতে পছন্দ করেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ তাঁর অনুগামীরাও সেটা চান না৷ তাই ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তান, ইরাকসহ অনেক জায়গা থেকে যত বেশি সম্ভব মার্কিন সৈন্য দেশে ফিরিয়ে আনার কৃতিত্ব দাবি করে চলেছেন ট্রাম্প৷ কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে মার্কিন স্বার্থরক্ষা করতে কিছু মার্কিন সৈন্য রাখতে হয়েছে তাঁকে৷ স্থানীয় কুর্দি বিদ্রোহীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে একদিকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী, অন্যদিকে বাশার আল আসাদ সরকারের প্রভাব-প্রতিপত্তি কমানোর চেষ্টা করে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷

সম্প্রতি আইএস জমি হারানোর ফলে সিরিয়ায় নতুন করে ছক সাজাচ্ছে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলি৷ বিশেষ করে তুরস্ক এই সুযোগে কুর্দি বিদ্রোহীদের দমন করার তোড়জোড় করছে৷ এমনকি সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করে সরাসরি কুর্দিদের সঙ্গে সংঘাতের হুমকি দিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান৷ বিপদের সময় কুর্দি জোটসঙ্গীদের সাহায্য না করে আচমকা মার্কিন সৈন্য সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ সরকারি সূত্র অনুযায়ী অবশ্য শুধু কৌশলগত কারণে কিছু সৈন্য স্থানান্তর করা হচ্ছে৷ বিশেষ করে আইএস গোষ্ঠী যখন আবার মাথাচাড়া দেবার চেষ্টা করছে, এমন সংকটের সময় ওয়াশিংটন হাত গুটিয়ে নেওয়ায় হতাশা দেখা যাচ্ছে৷ মার্কিন কংগ্রেসেও প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমালোচনা তীব্র হচ্ছে৷ এমনকি রিপাব্লিকান দলের নেতারাও সোচ্চার হচ্ছেন৷ এমনকি দলমতনির্বিশেষে তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকিও দিচ্ছেন তাঁরা৷

এমন অবস্থায় কোণঠাসা ট্রাম্প যথারীতি এক টুইট বার্তার মাধ্যমে তুরস্ককে হুমকি দিয়েছেন৷ একতরফাভাবে সিরিয়ায় হামলা চালালে তিনি তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেবেন বলে শাসিয়েছেন৷ তবে এর্দোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে ট্রাম্প সিরিয়ার উত্তরে ‘অনেক দিন আগে পরিকল্পিত' তুরস্কের এক সামরিক অভিযানের প্রতি সম্মতি জানিয়েছেন৷ তার বাইরে কোনো সামরিক পদক্ষেপ বরদাস্ত করবেন না তিনি৷ তবে তুরস্কের ঠিক কোন পদক্ষেপকে ‘এক্তিয়ারের বাইরে' হিসেবে বিবেচনা করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছে না ট্রাম্প প্রশাসন৷

শেষ পর্যন্ত বাস্তবে যাই ঘটুক না কেন, বিপদের সময় অ্যামেরিকা তার বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করে – এমন ভাবমূর্তি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে মার্কিন স্বার্থের ক্ষতি করবে বলে উদ্বেগ বাড়ছে৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কুর্দি, আরব ও অন্যান্য যোদ্ধাদের এসডিএফ গোষ্ঠীকে তুরস্কের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তুলে নিতে কার্যত বাধ্য করেছে ওয়াশিংটন৷ এবার তুর্কি সৈন্য যদি সত্যি সীমান্ত অতিক্রম করে, সে ক্ষেত্রে এসডিএফ চরম অসুবিধার মুখে পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

ন্যাটো সদস্য দেশ হওয়া সত্ত্বেও তুরস্কের সঙ্গে সার্বিকভাবে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়ছে৷ মস্কোর সঙ্গে বেড়ে চলা সামরিক সহযোগিতার কারণে মার্কিন প্রশাসন সে দেশের উপর কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞারও হুমকি দিচ্ছে৷ সিরিয়ায় রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা করতে তুরস্কও সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, এমন আশঙ্কা বাড়ছে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)