বিন লাদেন হত্যা রহস্য: হোয়াইট হাউস, পেন্টাগন মুখ খুলতে নারাজ
৫ মে ২০১১মিডিয়া এবং পাবলিককে কতোটা বলতে হবে বা না হবে, সে ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন যেন আগে থেকে কোনোরকম চিন্তাই করেনি৷ হোয়াইট হাউস প্রথমে বলে বিন লাদেন সশস্ত্র ছিল৷ একদিন পরে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জো কার্নি বলেন, না, বিন লাদেনের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না৷ সোমবার প্রেসিডেন্ট ওবামার সন্ত্রাসবাদ-প্রতিরোধী কর্মকর্তা বললেন, বিন লাদেনের স্ত্রীকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল, তাই তিনি গুলি লেগে মারা যান৷ পরদিন কার্নি বললেন, মহিলা নিজেই মার্কিন কমান্ডোদের দিকে ধেয়ে গেছেন এবং তিনি গুলিতে মারা যাননি, তবে আহত হয়েছেন৷
আর এখন প্রেসিডেন্ট ওবামা তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করেছেন যে, বিন লাদেনের মৃতদেহের ছবি প্রকাশ করা হবে না৷ এক্ষেত্রেও ওবামার নিজের মুখেই আগে অন্যরকম কথা শোনা গেছিল৷ আসলে বিন লাদেনের মৃত্যুতে মার্কিন প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে বাকি বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার যে অনেক ফারাক থাকতে পারে, এবং সে প্রতিক্রিয়াও যে একটা ডাইনামিক, গতিশীল এবং পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া, সেটাই যেন ওয়াশিংটনে কেউ খেয়াল করেনি৷ তাই এখন একের পর এক এ্যাড হক, অর্থাৎ অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷
বলতে কি, পাকিস্তানি সরকারও মোটামুটি একই ভাবে নাজেহাল হচ্ছেন৷ ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ স্বয়ং কতোটা জানেন, এবং কতোটা বলতে চান অথবা পারেন, তাই নিয়ে সমস্যা৷ ওদিকে দেশ-বিদেশের নানা বেয়াড়া প্রশ্ন৷ এর চাইতে এ্যাবটাবাদ অভিযান নিয়ে হলিউড ছবি করাটা অনেক সহজসাধ্য কাজ হবে৷
ওদিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তো নিজেই বিপদে পড়েছেন বিন লাদেনের নিহত হবার খবরের পর সাংবাদিকদের সামনে একটা সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিতে এসে৷ ম্যার্কেল মার্কিনি কায়দায় কিছুটা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে ফেলেছিলেন, বিন লাদেন নিহত হওয়ায় তিনি খুশি৷ এখন তাই নিয়ে তাঁর নিজের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলেই প্রশ্ন উঠেছে, কারোর মৃত্যুতে খুশি হওয়াটা খ্রিষ্টীয় আচরণ কিনা, এ'ধরণের প্রতিহিংসার মনোভাব মধ্যযুগীয় কিনা৷ অর্থাৎ বিন লাদেন অভিযানকে এখন আন্তর্জাতিক আচরণবিধি, নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় পড়তে হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম