বার্লিনে ধাক্কা খেলো শলৎসের দল
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইউক্রেন যুদ্ধের চাপে জার্মানির দলীয় রাজনীতি স্বাভাবিক ছন্দে এগিয়ে যেতে পারছে না৷ তিন দলের ফেডারেল সরকারের নীতি নিয়ে শরিক দলগুলির মধ্যেও মনোমালিন্য দেখা যাচ্ছে৷ তারই মাঝে রাজধানী শহর ও নগর রাজ্য বার্লিনের নির্বাচনে ভোটারদের রায় রাজনীতি জগতে বড় আলোড়ন তুললো৷ দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর ধরে ক্ষমতার শীর্ষে থাকার পর চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের ভরাডুবি হলো৷ অন্যদিকে বিরোধী রক্ষণশীল সিডিইউ দল স্পষ্ট জয়ের মুখ দেখলো৷
২০২১ সালে জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের সময়ই নগর রাজ্য হিসেবে বার্লিনেও আঞ্চলিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ নির্বাচনে জয়ের পর এসপিডি দলের নেতৃত্বে সরকারও গঠিত হয়৷ কিন্তু ভোটগ্রহণের সময় নানা বাধা-বিপত্তি ও সাংগঠনিক অনিয়মের জের ধরে আদালত সেই নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে নতুন করে নির্বাচনের নির্দেশ দেয়৷ রোববার সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বিরোধী সিডিইউ দল প্রায় ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে পেরেছে৷ প্রায় ১৮ শতাংশ ভোট পেয়ে শলৎসের এসপিডি দল বড় ধাক্কার মুখ দেখেছে৷ ফলে বার্লিনের শাসক মেয়র হিসেবে এসপিডি দলের ফ্রানৎসিস্কা গিফাই সংক্ষিপ্ত কার্যকালের শেষে বিদায় নিতে বাধ্য হবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ যদিও তাঁর জোট সরকার নতুন নির্বাচনেও কাগজে-কলমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পেরেছে৷ সিডিইউ দল অবশ্য এসপিডি ও সবুজ দলের সঙ্গে জোট গড়ার লক্ষ্যে আলোচনা চালাতে চায়৷
শলৎসের নেতৃত্বে ফেডারেল জোট সরকার গঠিত হবার পর প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রক্ষণশীল ইউনিয়ন শিবির তেমন নির্বাচনি সাফল্য দেখাতে পারে নি৷ এখন বার্লিনে জয়ের পর আগামী অক্টোবর মাসে হেসে রাজ্যেও ক্ষমতা ধরে রাখার স্বপ্ন দেখছে এই শিবির৷ একের পর এক রাজ্য হাতছাড়া হলে সংসদের উচ্চ কক্ষ বুন্ডেসরাটে শলৎসের জোট সরকার সমস্যায় পড়তে পারে৷
আঞ্চলিক নির্বাচনে স্থানীয় বিষয়গুলি গুরুত্ব পেলেও জার্মানির ফেডারেল সরকারের শরিক দলগুলির উপরেও তার প্রভাব পড়ে৷ শলৎসের এসপিডি দলের পাশাপাশি অপর শরিক দল উদারপন্থি এফডিপি-ও রোববার বার্লিনে খুব খারাপ ফলাফল করেছে৷ পাঁচ শতাংশের কম ভোট পেলে আঞ্চলিক বিধানসভায় মর্যাদাও হারাতে পারে এই দল৷ সরকারের শরিক হিসেবে শুধু সবুজ দলই নির্বাচনে ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রাখতে পেরেছে৷ চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর এমনকি বার্লিনে এসপিডি-কে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে তারা৷ সে ক্ষেত্রে বর্তমান জোট সরকার আবার ক্ষমতায় এলে সবুজ দলই শাসক মেয়রের পদের দাবিদার হতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে জয়ের পরেও সিডিইউ বিরোধী আসনে স্থান পাবে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)