1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রাজনীতি

১৫ আগস্ট ২০১৭

‘বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি, আওয়ামী লীগের না৷' ছোটবেলায় খুব খটকা লাগতো৷ এটা কেমন কথা! বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি হয় না কিভাবে! সেই উত্তর ছোটবেলায় না মিললেও বড় হওয়ার পর মনে হয় উত্তরটা আমি নিজেই দিতে পারি৷

https://p.dw.com/p/2iDhW
ছবি: AP

হ্যাঁ, শেখ মুজিবুর রহমান – বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠারও আগে থেকে রাজনীতি করতেন, এবং সেটা আওয়ামী লীগেরই রাজনীতি৷ কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, আরো তো অনেক নেতা ছিলেন, যারা সে সময় অভিজ্ঞতা, বয়স সবকিছুতেই শেখ মুজিবের চেয়েও অনেক বেশি এগিয়ে ছিলেন৷

তাহলে শেখ মুজিব কি করে হঠাৎ করে বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে উঠলেন? কারণ, বাংলার মানুষ কী চায়, কিভাবে তা আদায় করতে হবে তা সঠিক মুহূর্তে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পেরেছিলেন একমাত্র তিনিই৷ নীতি-আদর্শের সংগ্রামে অন্য দল তো বটেই, নিজ দলের নেতাদের চেয়েও যোজন যোজন এগিয়ে ছিলেন তিনি৷

নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয়, বড় হওয়ার পথে আশেপাশে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকেই পেয়েছি৷ সুবিধা পাবেন জেনেও অনেকেই সার্টিফিকেট নেননি, কারণ তাঁরা মনে করতেন দেশ স্বাধীন করার যুদ্ধ তাঁরা সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য করেননি৷ বিভিন্নভাবে তাদের স্মৃতিচারণ কাছ থেকে শোনার সৌভাগ্য হয়েছে৷ তাদের কাছ থেকেই শোনা, ‘কিছু একটা হতে যাচ্ছে' এমন তথ্য বঙ্গবন্ধুর কাছেও একাধিকবার এসেছিল৷ কিন্তু ‘বাঙালি আমার কিছু করতে পারে না' এমন মনোভাব সবসময়ই ছিল তাঁর৷ মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও তিনি মানতে পারেননি, বাঙালিরাই তাঁকে হত্যা করবে৷

Sheikh Mujibur Rahman Flash-Galerie
বাঙালি তাঁর ক্ষতি করতে পারে - বিশ্বাস করতেন না বঙ্গবন্ধুছবি: bdnews24

যুদ্ধ হলো, দেশও স্বাধীন হলো৷ ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১৷ গৌরবময় ইতিহাসের জন্ম দিয়েও মানবজাতির ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস ঘটনাটির কালো দাগ থাকল আমাদের নিজেদের কপালেই৷ স্বাধীনতার পাঁচ বছরের মাথায় সপরিবারে স্বাধীনতার মূল ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিটিকে হত্যা করাটা যেমন নৃশংস, হত্যার বিচার করা যাবে না, খোদ সংবিধানে এমন ভয়ংকর কালাকানুন জারি করাটা তার চেয়েও নৃশংসতম৷

১৯৭৫ সালের পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই স্রোতের উলটো পথে হাঁটতে শুরু করে বাংলাদেশ৷ ইতিহাস থেকে একসময় বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হলেও, সে ইতিহাস আবার ফিরে এসেছে৷ কিন্তু আলোচনাটা বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি নিয়ে নয়, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রাজনীতি৷ বিরোধী পক্ষের বঙ্গবন্ধুকে ‘বিতর্কিত করার' রাজনীতি তো আছেই, খোদ আওয়ামী লীগেরও ‘চর্বিত চর্বন', ‘অতিকথন' এবং ‘অপপ্রয়োগ' এই রাজনীতিতে মারাত্মক ভূমিকা রাখছে৷

<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Fkaocher.uzzal%2Fvideos%2F10213121239775297%2F&show_text=0&width=560" width="560" height="322" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowTransparency="true" allowFullScreen="true"></iframe>

উলটো রথে, উলটো পথে

স্বাধীনতার পর থেকে স্বভাবতই পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব তো আছেই, পাশাপাশি বাংলাদেশে ধর্মীয়, সাম্প্রদায়িক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক নানা কারণেই ভারতবিরোধী মনোভাবও প্রবল হয়ে উঠেছে৷ কিন্তু নিজের জন্মকে অস্বীকার করছে, এমন উদাহরণ কিন্তু এই দুই দেশেও নেই৷

‘কায়েদে আজম' মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার এক বছরের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন৷ তিনি মুসলিম লীগ করতেন৷ কিন্তু পরবর্তীতে ক্ষমতার পালা বদল হলেও কখনও জিন্নাহকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা বা তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়নি, বা তার প্রয়োজনও পড়েনি৷ জিন্নাহর পর দীর্ঘদিন মুসলিম লীগ ক্ষমতায় ছিল, পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ, এবং পশ্চিম পাকিস্তানে পিপলস পার্টি শক্তিশালী বিরোধীতা সৃষ্টি করলেও, সে আঘাত জিন্নাহর ওপর পড়েনি৷ মুসলিম লীগও জিন্নাহকে ‘নিজেদের' করে নিয়ে বিশেষ সুবিধা আদায়ের চেষ্টার দিকে যায়নি৷

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব' নিয়ে বিতর্ক চলছে, আরো অনেকদিন চলবে৷ কিন্তু ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কালিমালেপনের মতো ঘটনা জঙ্গিবাদে, সেনা অভ্যুত্থানে বিপর্যস্ত একটি দেশেও ঘটেনি৷

ভারতে ক্ষমতার পালাবদলের ইতিহাসও অনেকটাই উল্লেখযোগ্য৷ দীর্ঘদিন (প্রায় ৩০ বছর) ক্ষমতায় থাকার পর জাতীয় কংগ্রেসের পতন ঘটে, ক্ষমতায় আসে জনতা পার্টি৷ ভারতের স্বাধীনতার লক্ষ্যে সুভাষ বসুর সহিংস পন্থা ঠিক ছিল, নাকি মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন, এ নিয়ে বিতর্ক আছে৷ নেহেরু চাইলে ভারতবর্ষ এক রাখতে পারতেন কিনা, সেই নিয়েও আছে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা৷ কিন্তু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলতে থাকলেও পরবর্তীতে জাতীয় এই নেতাদের বিতর্কিত করে ইতিহাসকেই হুমকির মুখে ফেলা দেয়ার চেষ্টা বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও হয়নি৷

হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মহাত্মা গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধী, রাজিব গান্ধী, কিন্তু তাঁদের ব্যক্তিসিদ্ধান্তের নানা সমালোচনা থাকলেও কখনই সেটা রাষ্টীয়ভাবে কালিমালেপনের পর্যায়ে পৌঁছায়নি৷ হত্যাকারীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ারও চেষ্টা করা হয়নি৷

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দুই দশকে নানাভাবে ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে৷ হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা স্বভাবতই বুঝতে পেরেছিল, তীব্র প্রতিবাদ না হলেও, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শব্দগুলো ঠিকই রয়ে যাবে ইতিহাসের পাতায়৷ ফলে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে বঙ্গবন্ধু এবং ইতিহাস বিকৃত করা ছাড়া উপায় ছিল না৷

স্বাধিকার আন্দোলনের পর থেকে, স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বাংলাদেশে যেমন সমাজ গঠনের পথে এগোচ্ছিল, হঠাৎ করেই বাংলাদেশ ঠিক তার উলটো পথে যাত্রা শুরু করে৷ যারা এতোদিন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরোধিতা করেও সুবিধা করতে পারছিল না, তারাই হঠাৎ হয়ে ওঠে ক্ষমতার কেন্দ্র৷

‘শেখের বেটা', ‘শেখের পো'

১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আবার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ৷ বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা প্রতিহত করতে শুরু হয় ইতিহাস পুনর্লিখন৷ কিন্তু সেই পুনর্লিখন আর শুধু পুনর্লিখনের পর্যায়ে থেমে থাকেনি৷ বিপ্লবী চে গুয়েভারা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন দিয়েছেন৷ অথচ মৃত্যুর ৫০ বছরের মধ্যে তিনি নিজেই হয়েছেন ব্যবসার অন্যতম পণ্য৷

Anupam Deb Kanunjna DW-Bengali Service
অনুপম দেব কানুনজ্ঞ, ডয়চে ভেলেছবি: Privat

একই অবস্থা সৃষ্টি হয় বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রেও৷ সারা জীবন সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বঙ্গবন্ধু৷ অথচ তার দলের নেতারাই এখন তাকে সরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে৷ একসময় বঙ্গবন্ধুকে ‘শেখ সাহেব', ‘শেখের বেটা' ‘শেখের পো‘ এবং শেখ হাসিনাকেও ‘শেখের বেটি' বলে সম্বোধন করার লোক অনেক ছিল৷ কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ‘শেখ মুজিব' বলার অপরাধে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, এমন ঘটনাও ব্যক্তিগতভাবে জানা আছে৷

শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রকাশ করায় একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনাও তো আমাদের জানা৷ সেই আওয়ামী লীগ নেতাও অনেকের মতোই মনে করেছিলেন, অন্য কোন বিষয়ের চেয়ে ‘বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করা হয়েছে' অভিযোগটাই বেশি যুৎসই হবে৷ এমন চিন্তা পুরো আওয়ামী লীগ জুড়েই বর্তমান৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বভাবতই বঙ্গবন্ধুকে শুধু জাতির নয়, নিজের পিতা হিসেবেও অন্য মর্যাদায় দেখে থাকেন৷ আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ‘চোখে পড়ার' মতো করে নিজের উন্নতিতে বঙ্গবন্ধুকে দৃষ্টিকটুভাবে কাজে লাগানো এখন দেশজুড়ে হরদম ঘটে চলেছে৷

এমনই এক উদাহরণ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু৷ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, ঝালকাঠিতে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনায় তিনি বলেছেন ‘এ দেশ স্বাধীন না হলেও আওয়ামী লীগ এই দেশে মাথা তুলে থাকত৷ আমরা পার্লামেন্টের সদস্য থাকতাম৷' ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া রায়ের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি এই কথা বলেন৷ দেশ স্বাধীন না হলে আওয়ামী লীগ মাথা তুলে থাকতো কিনা, সে প্রশ্নের চেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, আমির হোসেন আমুর কাছে আওয়ামী লীগটাই দেশের চেয়ে বড় হয়ে গেল?

দেশটা স্বাধীন না হলেও চলতো, তিনি এমপি হতে পারলেই চলতো, অথবা, দয়া করে আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করে দিয়েছে, বিষয়টা কি এরকম? যে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশ করতে গেছেন ‘মাননীয়' মন্ত্রী, সেই বঙ্গবন্ধুকেই এতটা অপমান তিনি না করলেও পারতেন৷

নিজেদের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধুর 'সৈনিক' প্রমাণে যে পরিমাণ তোড়জোড় ইদানীং দেখা যায়, সে পরিমাণ উৎসাহ নিয়ে তার আদর্শ বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে দেশের উন্নতি আরো দ্রুত হওয়ারই সম্ভাবনা ছিল৷ এই ‘সৈনিকদের' বেশিরভাগই আবার জানেনও না বঙ্গবন্ধুর আদর্শটা কী ছিল৷

একাধিক ক্ষেত্রে আদর্শের কথা জিজ্ঞেস করলে উত্তরটা ‘সোনার বাংলা গড়া' পর্যন্তই সীমাবদ্ধ৷ অথচ কথায় কথায় ছয় দফার উল্লেখ করলেও অনেকে এখনও জানেনই না, ছয় দফার দফাগুলো আসলে কী ছিল৷ ফলে এমন ‘সৈনিকদের' মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম মাঝেমধ্যেই অন্যদের বিরক্তির কারণ হয় বই কি!

বঙ্গবন্ধুকে ‘বঙ্গের' হতে দিন

বঙ্গবন্ধুকে যতই নিজেদের কাছে টেনে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, ততই ‘জাতির জনক' না হয়ে ‘দলের জনকে' পরিণত হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু৷ ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতির কথাই ধরা যাক৷ ‘স্বাধীনতা কোন একক ব্যক্তির কারণে হয় নাই' রায়ের পর্যবেক্ষণে এস কে সিনহা এমন মন্তব্য করায় আইনমন্ত্রী ‘মর্মাহত' হয়েছেন বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে৷

এখন সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা পাল্লা দিয়ে কে কার চেয়ে বেশি প্রধান বিচারপতিকে হেয় করা যায়, আলোচনায় আসা যায়, সে চেষ্টায় লিপ্ত৷ কিন্তু আসলেই কি প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার ন্যূনতম চেষ্টা করেছেন? ৭ই মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতা ঘোষণার সূচনা বক্তব্য হিসেবে মনে করা হয়৷ সেই ভাষণের শুরুতেই আছে, ‘আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়৷' এই কথা থেকে এটাই কি স্পষ্ট না যে বাংলার মানুষের মধ্যে অনেকদিন ধরেই স্বাধীনতার আকাঙ্খা ছিল? কিন্তু বাংলার মানুষের সেই আওয়াজ তৎকালীন বেশিরভাগ নেতাই শুনতে পারেননি, যেটা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন এবং সঠিকভাবে সঠিক সময়ে সঠিক পথে বাঙালিকে পরিচালিত করতে পেরেছিলেন৷ এ কারণের তিনি এত দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন৷

Sheikh Mujibur Rahman Flash-Galerie
বাংলার মানুষের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুছবি: bdnews24

স্বাধীনতার ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে সাধারণের কাছে তুলে ধরার বদলে আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ‘সৌল এজেন্ট' হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রামে ব্যস্ত৷ একসময় ‘জয় বাংলা' ছিল স্বাধীনতাকামী মানুষের স্লোগান, ধীরে ধীরে তা আওয়ামী লীগের স্লোগানে পরিণত হয়৷ এতে আওয়ামী লীগ খুশি হয়, কিন্তু কেন হয়, জানি না৷ দীর্ঘদিন পর শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে সাধারণ মানুষের কণ্ঠে আবার ফিরে এসেছিল ‘জয় বাংলা'৷

বঙ্গবন্ধুকেও সাধারণ মানুষের কাছে ফিরতে দিন৷ আগেও যারা বঙ্গবন্ধুকে নিজেদের 'কুক্ষিগত' করে রাখতে চেয়েছিলেন, তারাই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত হয়েছিলেন৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে ঠিকই রয়ে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ছাপ৷

আবারও বলতে হয় ৭ই মার্চের ভাষণের কথা৷ বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, ‘ভায়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি৷ আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন৷' অথচ এখন প্রতিটি বিষয়েই নেতারা এমনভাবে বক্তব্য দেন, শুনতে মনে হয়, ‘আপনারা কিছু জানেন না, বোঝেনও না৷ আপনারা শুনুন, আমরা বলি৷'

যে সাধারণ মানুষকে বঙ্গবন্ধু এত ভালোবাসতেন, তাঁদের কাছেই তাঁকে ফিরতে দিন৷ স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা যত কুক্ষিগত করে রাখতে চাইবেন, ততই সাধারণ মানুষ থেকে দূরে সরে যাবেন৷ আলোচনার লক্ষ্য হোক বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রাজনীতি নয়৷

এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান