‘ফেসবুক হত্যা’র হুমকি দিল হ্যাকার গোষ্ঠী
১১ আগস্ট ২০১১‘অ্যানোনিমাস' শব্দটির মধ্যে কেমন যেন একটু রহস্য লুকিয়ে আছে৷ এই শব্দটি ব্যবহার করা হয় নামহীন কোনকিছু বোঝাতে, কিংবা এমন কাউকে বোঝাতে যিনি নিজের পরিচয় সযত্নে লুকিয়ে রেখেছেন৷ ইন্টারনেট অ্যানোনিমাস ব্লগারের সংখ্যা অনেক৷ কিন্তু হ্যাকার?
‘অ্যানোনিমাস' নামের ঐ হ্যাকার গোষ্ঠীটিকে পৃথিবীর শক্তিশালী দু'তিনটি হ্যাকার দলের মধ্যে গণ্য করা হয়ে থাকে৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ওয়েবসাইটগুলোকে অকেজ করে দিতে বেশ পারদর্শী এই গোষ্ঠী৷ গত ১৬ জুলাই এক ইউটিউব বার্তায় তাদের ঘোষণা, এবার হত্যা করা হবে ফেসবুককে৷
এই বার্তাটি ইন্টারনেটে প্রকাশের আগে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেশ খানিকটা বিকৃত করা হয়েছে৷ ফলে এটি পুরুষ না মহিলা কণ্ঠ তা বোঝা দুঃসাধ্য৷ বার্তায় ফেসবুক হত্যার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে৷ হ্যাকার গোষ্ঠীর দাবি, ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থার কাছে বিক্রি করছে৷ এমনকি ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য কখনোই মুছে ফেলছে না৷ বরং সেগুলো থেকে যাচ্ছে ফেসবুকের কাছে৷ তাই, যেকোন সময় ফেসবুক থেকে যেকারো তথ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব৷ ফেসবুকের এই কর্মকাণ্ডকে ‘অনৈতিক' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ‘অ্যানোনিমাস'৷ ফেসবুক বধে তাই সবার সহযোগিতাও চাচ্ছে এই দল৷
বলাবাহুল্য, ফেসবুকের কোন মুখপাত্র এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ তবে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ গত বছরই জানিয়েছিলেন, ‘‘আমরা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া কোন তথ্যই তৃতীয় কোন পক্ষের কাছে হস্তান্তর করিনা৷''
‘অ্যানোনিমাস' ফেসবুকে হামলার তারিখ ঘোষণা করেছে আগামী ৫ নভেম্বর৷ এই দিন অচল করে দেওয়া হবে ফেসবুক৷ এই অচল প্রক্রিয়াটিও খানিকটা ভিন্ন৷ একইসঙ্গে বেশ কয়েকজন হ্যাকার একটি নির্দিষ্ট স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইটে বারবার প্রবেশের চেষ্টা করে৷ এতে করে সাইটটির ওয়েব ট্রাফিক মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়, এবং একপর্যায়ে সেটি স্লো হয়ে যায় কিংবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়৷
তবে, এই ফেসবুক হত্যার পরিকল্পনায় ‘অ্যানোনিমাস' এর সব সদস্যের সমর্থন আছে বলে মনে হচ্ছে না৷ টুইটারে এসংক্রান্ত একটি বার্তাও প্রকাশ করেছে দলটির এক সদস্য৷ তাছাড়া, বর্তমানে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৭৫ কোটি৷ এত বিশাল ধারণক্ষমতার একটি ওয়েবসাইটকে গুটি কয়েক হ্যাকার কতটা কাবু করতে পারবে - তাও বড় প্রশ্ন৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ