ইউটিউব, ফেসবুকের মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের দুর্দশা তুলে ধরছে অস্ট্রেলিয়া
২ আগস্ট ২০১১অভিবাসীদের দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া যে কারো কাছেই কাঙ্খিত৷ দেশটির শক্তিশালী অর্থনীতির পাশাপাশি উন্নতমানের জীবনযাত্রা অনুন্নত দেশগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষকে টেনে আনছে৷ উত্তর আফ্রিকা থেকে যেমন নৌকায় করে প্রতি বছর হাজার হাজার লোক অবৈধ পথে ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি দিচ্ছে, ঠিক তেমন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও বহু মানুষ সমুদ্রপথে দেশটিতে পা রাখার চেষ্টা করছে৷ এই ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার কথা বলতে হয়৷ সমুদ্রপথে আসা এসব অবৈধ অভিবাসীরা যে সকলেই ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার নাগরিক তা নয়৷ এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে আদম পাচারের একটি পয়েন্ট হিসেবে এই দুটি দেশকে ব্যবহার করে থাকে মানব পাচারকারিরা৷ আর বিপদ সঙ্কুল সমুদ্র পথে ছোট্ট নৌকাতে করে পাড়ি দিতে গিয়ে নানা সময় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে৷ এসব অবৈধ অভিবাসীরা অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে৷ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মানবিক কারণেই অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের এই প্রার্থনা গ্রহণ করে৷ কিন্তু দিন দিন এসব অভিবাসীর আগমন এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার ঘটনা বেড়ে চলেছে৷ তাই মালয়েশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসে জুলিয়া গিলার্ডের সরকার৷
চুক্তি অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত জাতিসংঘের চার হাজার শরণার্থীকে অস্ট্রেলিয়া গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে৷ তার বিনিময়ে ৮০০ রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনাকারীকে মালয়েশিয়াতে ফেরত পাঠাবে অস্ট্রেলিয়ার সরকার৷ এর পাশাপাশি আরও একটি নতুন উদ্যোগ চালু করতে যাচ্ছে তারা৷ সেটা হলো এসব ফেরত পাঠানো অবৈধ অভিবাসীকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা এবং সেটি ফেসবুক এবং ইউটিউবে ছাড়া৷ প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড বলছেন, এর ফলে অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত রক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা আরও বাড়বে৷
জানা গেছে, প্রাথমিক ভাবে ৫৪ জন রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি হবে৷ এদের মধ্যে বেশিরভাগই আফগানিস্তান, ইরান এবং ইরাক থেকে আসা৷ অসি কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা হলো, সমুদ্র পথে অবৈধ অভিবাসীদের আগমন, কোস্ট গার্ড সেনাদের হাতে তাদের ধরা পড়া এবং জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের আবার বিমানে করে ফেরত পাঠানো এসব ভিডিও করে রাখা হবে৷ এইসব ভিডিও ইউটিউবে ছাড়া হবে যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ এভাবে অস্ট্রেলিয়াতে আসার আগে অন্তত দুইবার বেশি চিন্তা করে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন