পোশাক দিয়ে স্মার্টফোন চার্জ করা যাবে!
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫এ রকম পরিধেয় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন কয়েকজন ডিজাইনার৷ তাঁরা বলছেন ফ্যাশনের ভবিষ্যত নাকি এটাই!
প্রযুক্তি আর ফ্যাশনের সঙ্গে সৌরশক্তি৷ ডাচ ফ্যাশন ডিজাইনার পাওলিনে ফান ডোঙ্গেন-এর ‘সোলার ড্রেস'-এর এটাই নীতি৷ এটি এমন এক পোশাক, যা দিয়ে আপনি আপনার স্মার্টফোন ‘চার্জ' করতে পারবেন৷ ডোঙ্গেন বলেন, ‘‘এই পোশাক পরে সূর্যের আলোর নীচে দুই ঘণ্টা থাকলে ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ হয়ে যাবে৷''
হল্যান্ডের আরনহাইম শহরে নিজের অফিসে তিনি ‘পরিধেয় সৌরশক্তি' প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন৷ এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের ফ্যাশন জগতে ভালো করতে চান ডোঙ্গেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পরিধেয় সৌরশক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে আমি প্রযুক্তির সম্ভাবনা তুলে ধরতে চাই৷ বাসা-বাড়িতে সোলার প্যানেল দেখে মানুষ অভ্যস্ত৷ কিন্তু প্রযুক্তি এখন এতটাই এগিয়েছে যে, আমরা এরকম পাতলা প্যানেল পোশাকের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে পারি৷ আমি মানুষকে দেখাতে চাই, তাঁরা সত্যিকার অর্থে ‘মোবাইল' হয়ে উঠতে পারবে এবং সেটা ফ্যাশনেবল উপায়ে৷''
গত কয়েক বছর ধরেই ‘বুদ্ধিমান ফ্যাশন' ধারণাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ বিখ্যাত ব্র্যান্ড ‘মুন বার্লিন' যেমন পোশাকে এলইডি বাতির ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে৷
‘ওয়্যারেবল এক্সপেরিমেন্টস'-এর ডিজাইনাররা এলইডি নিয়ে কাজ করেন৷ তাঁরা একটি জ্যাকেট বানিয়েছেন, যেটা জিপিএস, ভাইব্রেশন আর হাতে থাকা লাইটের মাধ্যমে, এর ব্যবহারকারীকে শহরে ঘুরতে সহায়তা করে৷
হল্যান্ডের আরেক ডিজাইনার বোরে আকারসডিক একটি স্যুট ডিজাইন করেছেন, যেটা কেউ পরলে জীবন্ত ওয়াইফাই স্পট হয়ে ওঠে৷
হল্যান্ডের রটারডাম শহরে সম্প্রতি একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ পরিধেয় প্রযুক্তির নির্মাতারা তাঁদের পণ্য নিয়ে সেখানে হাজির হয়েছিলেন৷ ‘দ্য ফিউচার অফ ফ্যাশন ইস নাও' নামের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, ভবিষ্যতটা হচ্ছে পোর্টেবল প্রযুক্তির৷ প্রদর্শনীর মুখপাত্র জিওনিসে ট্যোইনিসেন বলেন, ‘‘আমি মনে করি ফ্যাশনের সঙ্গে প্রযুক্তির সম্মিলন একসময় ফ্যাশনের মানেটাই বদলে দেবে৷ কারণ দিনদিন এটা একটা পণ্য হয়ে উঠছে, এমন নয় যে, আজ আপনি এটা কিনলেন, আর কাল ফেলে দিলেন৷ এটা এমন হবে যে, ভবিষ্যতে এটা আপনার জন্য বর্তমানের ইলেকট্রনিক গেজেটের মতো আরেকটি প্রয়োজনীয় গ্যাজেট হয়ে উঠবে৷''
পাওলিনে ফান ডোঙ্গেন এর মতো ডিজাইনারের কাছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো টেকসই৷ সে লক্ষ্যে তিনি তাঁর পরিকল্পনাকে আরও বেশি করে ব্যবহারযোগ্য ও পোর্টেবল করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় অনেকের কাছে এটা এখনও অনেক দূরের একটি বিষয়৷ তাদেরকে আমাদের এর সম্ভাবনা দেখাতে হবে এবং বোঝাতে হবে, এর মানে তাদের জন্য কী হতে পারে৷ কম্পিউটার আর মোবাইল আসার শুরুর দিকে যেমনটা করতে হয়েছিল৷ সেসময় মানুষ ঐ সবের গুরুত্ব বুঝতে না পারলেও এখন বুঝতে পারছে যে, ওগুলো ছাড়া এখন আর চলা সম্ভব নয়৷ পরিধেয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও একসময় বিষয়টা এমনই হবে৷''
পরিধেয় প্রযুক্তি এখনও পর্যন্ত বড় বড় ডিজাইনারের শোরুমে দেখা গেলেও শিগগিরই এটা সবার মনে স্থান করে নেবে বলে আশা পাওলিনে ফান ডোঙ্গেন এর৷