যন্ত্র নেবে পোশাকের মাপ
২১ নভেম্বর ২০১২জামাকাপড় কেনা মানেই সঠিক মাপের ব্যাপার৷ মাপ ভুল হলে হয় দোকানে গিয়ে বদলাতে হয়, কিংবা দর্জির কাছে গিয়ে জামাকাপড় প্রয়োজনমতো ছোট বা বড় করিয়ে নিতে হয়৷ দোকানে গেলে তাও কেনার সময় জামাকাপড় পরে দেখে নেওয়া যায়, মাপ ঠিক আছে কি না৷ কিন্তু ইন্টারনেটে জামাকাপড় কিনলে তাও সম্ভব নয়৷ পর্দায় জামাকাপড়ের ছবি দেখে নিখুঁতভাবে আন্দাজ করা কঠিন৷ সাইজ লেখা থাকলেও তো পোশাক সম্পর্কে হুবহু আন্দাজ পাওয়া সম্ভব নয়৷
এই সমস্যার সমাধান করতে এগিয়ে এসেছেন ব্রিটেনের গবেষকরা৷ তারা এমন এক ‘বড়ি-স্ক্যানার' তৈরি করেছেন, যার সামনে দাঁড়ালেই যে কোনো মানুষের সঠিক মাপজোক জানা যায়৷ ঘরে বসেই এই কাজ করা যাবে৷ কারণ নামে স্ক্যানার হলেও যে কোনো ওয়েবক্যামের মাধ্যমেই বিশেষ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে নিখুঁত ত্রিমাত্রিক ছবি তোলা যাবে৷
তারপর সেই তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া যায় অনলাইন দোকানে৷ তাদের কাছে সেই মাপ অনুযায়ী যে সব পোশাক রয়েছে, আপনি শুধু সেগুলিই দেখতে পারবেন৷ তারপর পছন্দ করে বেছে নিলেই হলো৷ ইন্টারনেটে সম্ভাব্য ক্রেতাদের মনে এই দ্বন্দ্ব কীভাবে দূর করা যায়, তাই নিয়ে অনেক কাল ভাবনা-চিন্তা চলছিল৷ এবার এই স্ক্যানারকে মুশকিল আসান হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ আশা করা হচ্ছে, এর ব্যবহার শুরু হলে অনলাইন পদ্ধতিতে জামাকাপড় বিক্রি হুহু করে বেড়ে যাবে৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘কমস্কোর' নামের এক সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, চলতি বছরে জুন মাস পর্যন্ত অনলাইনে যে পরিমাণ কেনাবেচা হয়েছে, তার মধ্যে পোশাক-আসাকের অংশ ছিল মাত্র ১৪ শতাংশ৷ তার উপর অনলাইন পদ্ধতিতে কেনা জামাকাপড়ের প্রায় ৩০ থেকে ৬০ শতাংশই আবার ফেরত পাঠানো হয় বলে অনুমান করছেন লন্ডন কলেজ অফ ফ্যাশনের গবেষক ফিলিপ ডেলামোর৷ তিনি লক্ষ্য করেছেন, অনেক ক্রেতা নিশ্চিত হতে না পারায় একাধিক মাপের পোশাক কেনেন, তারপর সঠিকটি রেখে বাকিগুলি ফেরত পাঠিয়ে দেন৷
এলসিএফ, সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও ইমেজিং গবেষক দল ও বডিমেট্রিক্স নামের একটি সংস্থা নতুন এই স্ক্যানার তৈরি করেছে৷ বডিমেট্রিক্স এর আগেই নানা ধরণের স্ক্যানার তৈরি করেছে, যার মধ্যে একটি মাইক্রোসফটের এক্সবক্স ভিত্তিক গেমসে কাজে লাগানো হয়৷ তবে আলাদা স্ক্যানার যন্ত্র নয়, ওয়েবক্যামকেই স্ক্যানিংয়ের কাজে লাগানো হয়৷ বার্লিনের আপক্লাউড নামের এক সংস্থাও এমন প্রযুক্তি তৈরি করেছে৷ তবে লন্ডনের গবেষকদের দাবি, নতুন এই মাপজোকের স্ক্যানার এত নিখুঁতভাবে মাপ নিতে পারবে, যেমনটা আগে কখনো সম্ভব হয় নি৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স)