দুর্নীতি দমনে যোগীরাজ রামদেবের অনশন সত্যাগ্রহে বিচলিত সরকার
৩ জুন ২০১১দুর্নীতির ইস্যুতে আন্না হাজারের অনশন ঘিরে গোটা দেশে যেভাবে সরকার-বিরোধী বিতর্কের ঝড় উঠেছিল, সরকার চাননা, সেই একই ইস্যুতে যোগগুরু রামদেবের আমৃত্যু অনশন সত্যাগ্রহে তার পুনরাবৃত্তি হোক৷ গত কয়েকদিন ধরে তাই সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব রামদেবকে বুঝিয়েসুজিয়ে নিরস্ত করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে৷ এই বাড়াবাড়িকে আবার কংগ্রেসের একাংশ পছন্দ করছেন না৷ এখন মাত্র দুজন মন্ত্রীকে এই কাজে লাগানো হয়েছে৷ মানব সম্পদ বিকাশমন্ত্রী কপিল সিব্বাল এবং পর্যটনমন্ত্রী সুবোধকান্ত সহায়৷ আজ তাঁরা দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে বাবা রামদেবের সঙ্গে আলোচনা করেন৷
আলোচনায় কিছুটা ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলেও রামদেব তাঁর আগামীকালের অনশন কর্মসূচিতে অনড় আছেন৷ বাবা রামদেব কী চান? এক, সরকারকে লোকপাল বিল ও পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি আইন পাশ করাতে হবে৷ দুই, দেশে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটিয়ে দোষীদের কড়া শাস্তি দিতে হবে৷ তিন, কালো টাকা উদ্ধার করতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী এবং উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা লোকপাল আইনের আওতায় আসবে কিনা তা জনমতের ভিত্তিতে ঠিক করা হবে৷
রামদেবের অনশন সত্যাগ্রহে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিজেপির৷ রামদেবের লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমর্থকরা যেভাবে তাঁর পেছনে দাঁড়িয়েছেন ভবিষ্যতে যদি এই গেরুয়াধারী কোন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তাহলে হিন্দু ভোট হারাবার একটা আশঙ্কা রয়েছে বিজেপির মনে৷ অথচ কৌশলগত কারণে প্রকাশ্যে বিজেপি রামদেবের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করতে৷ কংগ্রেস মুখপাত্র মনুসিংভির মন্তব্য, এরমধ্যে কোন পক্ষেরই উচিত নয় রাজনীতি আনা৷ আনলে সেটা হবে ভুল৷ কথা হলো, বাবা রামদেব তাঁর অনশন সত্যাগ্রহ কর্মসূচিকে কতদিন অ-রাজনৈতিক রাখতে পারেন, সেটাই দেখার৷
লোকপাল বিলের প্রাণপুরুষ আন্না হাজারের মতে, সরকার যেভাবে রামদেবকে মাথায় তুলেছেন, তার উদ্দেশ্য নাগরিক সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা৷
দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিশাল শিবির বসেছে৷ এক কোটি লোকের সমাবেশ হবার সম্ভাবনা৷ দেশেবিদেশে যোগ- শিক্ষা দিয়ে তিনি বিপুল অর্থসম্পদের মালিক৷ ঘোরাফেরা করেন নিজস্ব জেট বিমানে৷ ওঠেন পাঁচতারা হোটেলে এমনটাই লোকে বলে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক