1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সরকার দাবি মানায় অনশন ভাঙলেন হাজারে

৯ এপ্রিল ২০১১

ভারত থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার ব্রত নিয়ে প্রায় পাঁচ দিন ধরে অনশন করলেন সমাজকর্মী আন্না হাজারে৷ অনেক দর কষাকষির পর সরকার শেষ পর্যন্ত জনমতের চাপে তাঁর সব দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলো৷

https://p.dw.com/p/10qZS
বিপুল জনসমর্থন পেয়েছেন আন্না হাজারেছবি: AP

স্বাধীনতার পর ভারত এমন অভূতপূর্ব গণআন্দোলন দেখে নি৷ একদিকে নাগরিক ও সুশীল সমাজ – অন্যদিকে দলীয় রাজনীতির প্রতিনিধিরা৷ কার্যকরভাবে দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে ১৯৬৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন সরকার সংসদে যে সব আইনের খসড়া পেশ করেছে, প্রায় সব দলই তা কোনো না কোনো ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে৷ আজ বিপুল অর্থনৈতিক উন্নতি সত্ত্বেও একের পর এক বিশাল মাপের কেলেঙ্কারি যখন দেশকে গ্রাস করে চলেছে, তখনই আন্না হাজারেকে সামনে রেখে দেশের মানুষ দাবি তুলেছেন, ‘অনেক হয়েছে, আর নয়৷ দুর্নীতি নির্মূল করার সময় এসে গেছে৷'

Anna Hazare
ভারত থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার ব্রত নিয়েছেন আন্না হাজারেছবি: UNI

কী চাইছেন আন্না হাজারের নেতৃত্বে নাগরিক সমাজের মানুষ? আন্না হাজারে এক কড়া লোকপাল বিলের খসড়া পেশ করেছেন৷ তবে সেই বিল যে হুবহু আইনে পরিণত করতে হবে, এমন কথা কেউ বলছে না৷ এই আইনের খসড়া তৈরির জন্য এমন এক কমিটি গঠনের দাবি রাখা হয়েছিল সরকারের কাছে, যাতে ৫০ শতাংশ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বাকি ৫০ শতাংশ সরকারের প্রতিনিধি থাকবেন৷ গোটা প্রক্রিয়াকে আইনি বৈধতা দিতে সরকারকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে – এমন দাবিও করেছিলেন হাজারে৷ সরকার প্রথমে হাজারের দাবি প্রত্যাখ্যান করলে তিনি ১২ এপ্রিল ভারত জুড়ে স্বেচ্ছায় কারাবরণের ডাক দেন৷ অনেক দর কষাকষির পর সরকার সব দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে৷ সরকারকে প্যাঁচে ফেলতে বিরোধী দলগুলি যাতে বিষয়টি থেকে ফায়দা তুলতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকেই কাছে ঘেঁষতে দেন নি আন্না হাজারে ও তাঁর অনুগামীরা৷ দুর্নীতির প্রশ্নে তাঁদের হাতও যে কলুষিত, তা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

আন্না হাজারের তৈরি লোকপাল বিলের বর্তমান খসড়ায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে শাস্তি আরও কঠোর করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ তবে সরকার ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের এড়িয়ে নাগরিক সমাজের অনির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার যে প্রস্তাব রয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ সমালোচকদের মতে, এর ফলে গণতান্ত্রিক কাঠামোর বৈধতা কমে যাবে৷ নেতা ও আমলাদের হস্তক্ষেপ এড়িয়ে দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ করা থেকে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার কার্যকর ও বাস্তব প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাই হবে কমিটির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ তবে আইনের খসড়া একবার প্রস্তুত হয়ে গেলে কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষেই এবার তার বিরোধিতা করা যে কঠিন হয়ে উঠবে, এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ জনমতের অভূতপূর্ব চাপ তাদের মুখোশ খুলতে বাধ্য করবে – এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষেকরা৷ আন্না হাজারে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ১৫ই অগাস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে সরকার লোকপাল আইন প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হলে শুরু হবে নতুন আন্দোলন৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম