1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লিতে আম আদমি সরকার

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৪ ডিসেম্বর ২০১৩

দিল্লিতে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনের দাবি পেশ করেছেন আম আদমি পার্টি৷ মুখ্যমন্ত্রী হবেন দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ শপথ গ্রহণ সম্ভবত ২৬ ডিসেম্বর৷ নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পালন করাই হবে পার্টির প্রধান চ্যালেঞ্জ৷

https://p.dw.com/p/1Afia
ছবি: UNI Photo service

সব জল্পনার অবসান শেষে নির্বাচনি রায়ের ১৫ দিন পর কংগ্রেসের হাত ধরে দিল্লির মসনদে বসতে চলেছে আম আদমি পার্টি, সংক্ষেপে আপ৷ ভঙ্গুর রায় নিয়ে প্রথম দিকে কংগ্রেস ও বিজেপি কোনো দলই সরকার গঠনে আগ্রহ দেখায়নি৷ এই প্রথমবার নির্বাচনে নেমে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিল্লি বিধানসভার ৭০টি আসনের মধ্যে ২৮টি আসন নিজের ঝুলিতে ভরে দিল্লির রাজনৈতিক মঞ্চে এক নতুন শক্তিরুপে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে এই দল৷ মুখ্যমন্ত্রী হবেন দলের সর্বাধিনায়ক আন্না হাজারের একদা ভাবশিষ্য অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ শপথ গ্রহণ সম্ভবত আগামী ২৬ ডিসেম্বর রামলীলা ময়দানে৷

কে এই কেজরিওয়াল? ৪৪ বছর বয়সি কেজরিওয়ালের জন্ম দিল্লি লাগোয়া হরিয়ানায়৷ পাদপ্রদীপে আসেন ২০১১ সালে যখন তিনি গুরু আন্না হাজারের সঙ্গ ত্যাগ করে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করেন৷ শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি খড়গপুর আইআইটি থেকে পাস করা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার৷ কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন সর্বভারতীয় রাজস্ব বিভাগে৷ পরে স্বেচ্ছায় অবসর নেন৷

সরকার গঠন করবেন কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কেজরিওয়াল প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের এক অভিনব পন্থা অনুসরণ করেন৷ সোস্যাল নেটওয়ার্কিং, এসএমএস, ফোন এবং সভা করে ভোটারদের মত জানতে চাইলে তাঁদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ সরকার গঠনের পক্ষে রায় দেন৷

ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ

প্রশাসনিক দিক থেকে অনভিজ্ঞ আম আদমি পার্টির সামনে ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ৷ প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক৷ নির্বাচনে যেসব প্রতিশ্রুতি পার্টির ইশতেহারে ছিল তা পূরণ করা কেজরিওয়ালের পক্ষে কতটা সম্ভব হবে এই মুহূর্তে বলা মুশকিল৷ যেমন দুর্নীতি নির্ভর কর্ম সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জনলোকপাল আইন প্রণয়ন৷ তাঁর মতে, সম্প্রতি সংসদে পাস হওয়া লোকপাল বিল যথেষ্ট নয়৷ ঐ আইনে দুর্নীতি দূর হবে না৷ দুর্নীতিবিরোধী আইন আরো কঠোর করা জরুরি৷ দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য দরকার গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার শুদ্ধিকরণ এবং দায়বদ্ধতা৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আমলা-রাজনীতিকদের অশুভ আতাঁত কেজরিওয়াল সরকার কতটা ভাঙতে পারবেন, সেবিষয়ে সংশয় আছে৷

অন্যদিকে কংগ্রেসের সমর্থন নিঃশর্ত নয়, ইস্যু-ভিত্তিক৷ তাই প্রতিপদে ঝুঁকি থাকছে৷ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের অনুমোদন নিতে হবে৷ সেক্ষেত্রে কেজরিওয়ালের সাফল্য পরনির্ভর৷ এটাই জোট রাজনীতির বাস্তবতা৷ এছাড়া প্রতিটি বড় সিদ্ধান্তের জন্য বারংবার গণভোট নেয়াটা নীতি হিসেবে ঠিক হলেও বাস্তবে অসুবিধা আছে৷ নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি হিসেবে অগ্রাধিকার দেয়া হয়, জনলোকপাল ছাড়াও মহিলাদের নিরাপত্তা, তারজন্য বিশেষ বাহিনী গঠন, পরিবার পিছু দৈনিক ৭০০ লিটার জল বিনামূল্যে সরবরাহ করা, বিদ্যুতের দাম অর্ধেক করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নতি করা ইত্যাদি৷ বিশেষজ্ঞদের মত হলো, স্থানীয় ইস্যু যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, জল ইত্যাদির মতো স্থানীয় সমস্যাগুলির সমাধান আম আদমি সরকার করতে পারলেও মুদ্রাস্ফীতি, জাতীয় নিরাপত্তা, রাজস্ব ঘাটতি ইস্যুগুলির সমাধান কেজরিওয়ালে হাতের বাইরে৷ তবে এটা ঠিক আম আদমি পার্টি আগামী বছরের সংসদীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে একটা দৃষ্টান্তমূলক নজির রাখতে চেষ্টার কসুর করবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য