চ্যালেঞ্জের মুখে সু চি
১৩ নভেম্বর ২০১৫রোববার অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে সু চি-র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এ পর্যন্ত নিম্ন কক্ষে ২৩৮ টি এবং উচ্চকক্ষে ১২৬টি আসন পেয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনও এনএলডি-কে জয়ী ঘোষণা করেছে৷
প্রায় তিন দশক গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে অবশেষে দেশ শাসনের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন সু চি৷ ঠিক পাঁচ বছর আগে তাঁকে মুক্তি দিয়েছিল সামরিক জান্তা৷ পাঁচ বছর পর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতারোহনের পথ তৈরি করেছেন ঠিকই, তবে সে পথ এখনো কণ্টকাকীর্ণ৷
এ নির্বাচনের পর মিয়ানমারে গণতন্ত্রের চর্চা, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার সূচনা হবে বলে আশা করা হলেও বিষয়গুলো নিয়ে সংশয় অনেক৷ সবচেয়ে বড় সংশয় বা হুমকি নিশ্চয়ই সামরিক শাসনের দীর্ঘ অতীত এবং বর্তমান সংসদেও সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ প্রভাব৷ মিয়ানমারের সংসদের দুই কক্ষেরই এক চতুর্থাংশ আসনে কোনো নির্বাচন হয়নি, কারণ, সেই আসনগুলো সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত৷ বাকি আসনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৪০টিতে জয়ী হয়েছেন সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)-র প্রার্থীরা৷
তারপরও নির্বাচনে সু চি-র দলের বিশাল জয়কে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের সূচনাই বলা হচ্ছে৷
সু চি-কে অভিনন্দন জানাচ্ছেন বিশ্ব নেতারা৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানিয়েছেন টেলিফোনে৷
জাতীয় সংসদের বাইরের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি মিয়ানমারের এ নির্বাচনকে বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে৷
এ নির্বাচন সু চি-র জন্যও খুব তাৎপর্যপূর্ণ৷ নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী নেত্রী মিয়ানমারের রাজনীতিকে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে কিভাবে, কতটা বের করে আনতে পারেন সেটাই এখন দেখার৷ সু চি সে কাজ শুরু করেছেন৷ সাংবিধানিক বাধার কারণে তিনি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতে পারছেন না৷ আগামী মার্চ পর্যন্ত সাবেক সেনাপ্রধান থেইন সেইন-ই প্রেসিডেন্ট থাকছেন৷ সু চি-কে এখন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে৷ সংবিধান অনুযায়ী সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দলের মনোনীত প্রার্থীই প্রেসিডেন্ট হবেন৷ তাই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচন এখন সু চি-র দায়িত্বে৷
প্রেসিডেন্ট হবার দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে আছেন সংসদের স্পিকার শয়ে মান৷ ইতিমধ্যে চিঠি লিখে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সু চি৷ বর্তমান প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন এবং সেনাপ্রধান মিন অং-এর সঙ্গেও আলোচনায় বসছেন সু চি৷
এসিবি/ডিজি