এবার প্রাণ ফিরছে রমনা বটমূলে
৯ এপ্রিল ২০২২ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন বলছে, এ বছর পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান যেমন থাকবে, তেমনি চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রাও বের হবে৷ এছাড়া সারা দেশে বৈশাখী মেলা এবং শোভাযাত্রার আয়োজনও থাকবে৷ জেলা এবং উপজেলায় থাকবে কুইজ প্রতিযোগিতা, নববর্ষের সাজ এবং লোকজ মেলা৷
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই বছরের প্রাণহীন পহেলা বৈশাখ পেরিয়ে এবছর সারা দেশে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালির প্রিয় সার্বজনীন অনুষ্ঠান বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উদযাপন করা হবে৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে সব ধরনের আয়োজন থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে৷
গতবছর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজনের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে এসে সরকার সেই অনুষ্ঠান বাতিল করে দেন৷ এবছরও সেরকম হবার সম্ভাবনা আছে কিনা সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল৷
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুল্যাহেল বাকী জানান বুধবার ছায়ানটকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রমনার বটমূলেই এবারের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা জানান, অনুমতির পরে আর কোনো বাধা নেই৷ তারা এরইমধ্যে মহড়া শুরু করে দিয়েছেন৷ প্রতিবার ১২৫ জনের মতো শিল্পী এ আয়োজনে অংশ নেন৷ এবার স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি বিবেচনা করে শিল্পীর সংখ্যা অল্প কয়েকজন কমিয়ে আনা হবে৷
তিনি আরো জানান, ‘‘দুই বছর পর আমরা এটি করতে পারছি বলে খুবই আনন্দিত৷ অনুষ্ঠানের সময়টাও সামান্য একটু কমে আসবে৷ তাছাড়া সকলেরই প্রবল উৎসাহ আছে৷ অনেকদিন পর এমন আনন্দ-আয়োজনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি৷''
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ চারুকলা বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে সেখানে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে৷ জয়নুল গ্যালারির সামনে একদল শিক্ষার্থী মাটির সরায় মাছ, পাখি, ফুলসহ নানা চিত্র এঁকে চলেছে৷ আরেকদল নানা ধরনের মুখোশ তৈরি করছে৷ কিছু শিক্ষার্থী হাতপাখা, চরকিসহ নানান জিনিস বানাচ্ছে৷
শিক্ষার্থীরা জানান, এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিফ থাকবে৷ ভেতরে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় কয়েকজন শ্রমিক মোটিফগুলোর কাঠামো তৈরি করছেন৷
রজনীকান্ত সেনের গান ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে' এবারে চারুকলার বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা ফিরে এলেও তারা স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারটা বিবেচনায় রেখেছেন৷ এবার শোভাযাত্রায় মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্বের ওপর জোর দেয়া হবে৷ তিনি আরও বলেন, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা তারা নির্ধারণ করে দিতে চান না; আগ্রহী যে কেউ এতে অংশ নিতে পারবেন৷ মেট্রোরেল নির্মাণকাজের জন্য শোভাযাত্রার গতিপথে একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ কিন্তু সময় সকাল ৯টাই থাকবে৷
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানান, তারা বর্ষবরণ ঘিরে আয়োজিত সকল আয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পক্ষে পদক্ষেপ নিয়েছেন৷
বাংলা একাডেমি, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি সহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান এই আয়োজনের সাথে যুক্ত থাকবে৷ এছাড়া বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে নববর্ষের আয়োজন থাকবে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ নাসরিন ইলা জানান এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুলতলার নববর্ষের আয়োজন থাকছে না৷ এছাড়া ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানও এ বছর থাকবে না৷
এএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)