বাড়িতে বসে নববর্ষ উদযাপন করুন: প্রধানমন্ত্রী
১৩ এপ্রিল ২০২০নববর্ষ উপলক্ষ্যে রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী৷ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও অনলাইনে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্প্রচার করা হয়৷
ভাষণে হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান৷
স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়াও এই সংকটকালীন সময়ে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তাদের সম্মানী ও বীমার জন্য ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা জানান তিনি৷
বলেন, ‘‘মহামারি প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷''
তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের আস্বস্ত করে বলেন, দেশে সুরক্ষা সরঞ্জামের কোনো ঘাটতি নেই৷ নিজেকে সুরক্ষিত রেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা৷
‘‘একইসঙ্গে সাধারণ রোগীরা যাতে কোনভাবেই চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হন সেদিকে নজর রাখার জন্য আমি প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি৷''
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত৷ এ অবস্থায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চারটি মূল কাজের পরিকল্পনা তিন ধাপে বাস্তবায়নের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী৷
অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রণোদনা দেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ৷
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা আমাদের অর্থনীতির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আমরা জানি না এই সংকট কতদিন থাকবে এবং তা আমাদের অর্থনীতিকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে৷ তবুও সম্ভাব্য অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷''
প্রধানমন্ত্রী যে চারটি কার্যক্রমের কথা বলেছেন
>> সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা: সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে কর্মসৃজনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে৷
>> আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখা হল আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের মূল উদ্দেশ্য৷
>> সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি: দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হবে৷
>> মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা: অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ এমনভাবে বৃদ্ধি করা যেন মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে৷
তিনি কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে এই সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এক টুকরো জমিও ফেলে না রেখে সেখানে আবাদ করুন৷
‘‘এই দুঃসময়ে আমাদের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা শুধু সচল রাখা নয়, আরও জোরদার করতে হবে৷ সামনের দিনগুলোতে যাতে কোনো প্রকার খাদ্য সঙ্কট না হয়, সেজন্য আমাদের একখণ্ড জমিও ফেলে রাখা চলবে না,'' বলেন শেখ হাসিনা৷
এসএনএল/এফএস