উত্তাল প্রজন্ম চত্বর
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই৷ নেই লাঠি-বৈঠা নিয়ে হিংস্র আন্দোলনের আহ্বান৷ নেই জোরপূর্বক ডেকে নিয়ে সমাবেশে হাজির করার নজির৷ মোটকথা, বাংলাদেশের প্রচলিত সহিংস রাজনৈতিক আন্দোলন, হরতালের সঙ্গে কোন মিলই নেই এই চত্বরের৷
বরং সেখানে জড়ো হওয়া লাখো মানুষ ছুটে এসেছেন নিজের তাগিদে৷ একাত্তরে লাখো মায়ের কোল খালি করা ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান তারা, চান বোনকে ধর্ষণ করা রাজাকারের বিচার৷ বিচার চান ত্রিশ লাখ শহীদের হত্যাকারীদের৷ আর সেই দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে নির্ঘুম সময় কাটাচ্ছে প্রজন্ম চত্বর৷
সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক, টুইটারের পাশাপাশি কমিউনিটি বাংলা ব্লগগুলো এগিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের অহিংস এই আন্দোলনকে৷ সামহয়্যার ইন ব্লগে বুধবার প্রকাশিত এ রকম এক নিবন্ধের শিরোনাম, ‘শাহবাগ থেকে উদ্দীপ্ত হয়ে ঘরে ফেরা'৷ ছবিসহ এই নিবন্ধটি লিখেছেন ব্লগার লতিফা লতা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘যতোবার শাহবাগ যাই ততোবার আমি উদ্দীপ্ত হই এবং আবার যাওয়ার তাড়না বোধ করি৷ এ যেন এক ঘোর, এ যেন এক নেশা৷ দেশপ্রেমের এই নেশায় আমি বুঁদ হয়ে থাকতে চাই৷ আমার এই ঘোর যেন কোনোদিন না কাটে৷''
একই ব্লগ সাইটে এম. মিজানুর রহমান সোহেল প্রকাশ করেছেন শাহবাগ বিষয়ক ২০টি ফেসবুক পাতার তথ্য৷ এ রকমভাবে অন্যান্য ব্লগসাইটেও শাহবাগ চত্বর নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে অসংখ্য নিবন্ধ৷ পাশাপাশি ফেসবুক টুইটারে চলছে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অক্লান্ত পরিশ্রম৷ কখনো প্রজন্ম চত্বরের সর্বশেষ খবর জানাচ্ছেন তারা৷ কখনো নিজেদের আন্দোলনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন এই অ্যাক্টিভিস্টরা৷ ‘শাহবাগে সাইবার যুদ্ধ' শীর্ষক একটি ফেসবুক পাতায় গত কয়েকদিনে জড়ো হয়েছেন প্রায় ৩৪ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী৷ আন্দোলনকারীদের টুইটার হ্যাশট্যাগ হচ্ছে #shahbag৷
এখানে উল্লেখ্য করা যেতে পারে, ডয়চে ভেলের সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড ‘দ্য বব্স' এর মনোনয়ন গ্রহণও চলছে এখন৷ thebobs.com/bengali ঠিকানায় মনোনয়ন জমা দিতে পারেন যেকেউ৷ বিভিন্ন দেশের ১৪টি ভাষার এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলা ভাষাও রয়েছে৷ ফলে বাংলা ভাষায় সক্রিয় যেকোন অনলাইন আন্দোলনও এই প্রতিযোগিতায় জায়গা পাবে৷