‘আইন এমনই হওয়ার কথা ছিল’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩এ সংশোধনীর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় মাহমুদুর রহমান মান্না বললেন, এতে অসুবিধার কিছু তিনি দেখছেন না৷
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না৷ সম্প্রতি ‘নাগরিক আন্দোলন'-এ নেমে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন৷ আওয়ামী লীগের নেতা হলেও তাঁকে সরকারের সমালোচনা করতে দেখা গেছে বেশ কয়েকবার৷ তাঁর কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারের ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের জন্য আপিলের সমান সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের উদ্যোগ পরে কোনো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে কিনা৷ এ প্রশ্নে তাঁর জবাবটা খুব সরল-সহজ৷ তাঁর মতে, যে কোনো মামলাতেই দু পক্ষের আপিলের সুযোগ থাকে, ট্রাইবুনালের আইনে যে তা ছিল না এটা অস্বাভাবিক, গণদাবির মুখে বরং বড় একটা অস্বাভাবিকতাই দূর হলো৷
ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের জন্য আপিলের সমান সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ এ বিষয়ের একটি প্রস্তাব মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেয়া হয়৷
সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, ‘‘জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনেই আইনের এ সংশোধনী বিল আকারে পাস হবে৷ ফলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মামলায় ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সংশোধিত আইনেই আপিল করা যাবে বলে আশা করা যায়৷''
গত সপ্তাহে আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেয়ার পর থেকেই শাহবাগে ব্লগারদের উদ্যোগে শুরু হয় জনতার আন্দোলন৷ একাত্তরের ভূমিকার জন্য ‘মিরপুরের কসাই' নামে পরিচিত কাদের মোল্লাসহ অন্যান্য চিহ্নিত যু্দ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে – এই একটাই দাবি সবার৷ প্রবাসী বাংলাদেশিরাও তুলেছেন এ দাবি৷ দাবি আদায়ে অনড় সবাই৷ সরকার দাবি পূরণের জন্য উদ্যোগী হবে এটাই ছিল তাঁদের প্রথম প্রত্যাশা৷
সোমবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে রাষ্ট্রপক্ষেরও আপিল করার সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ায় সে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে৷ মাহমুদুর রহমান মান্না জানালেন, সোমবার এ কারণে সরকারকে অভিনন্দনও জানিয়েছে ‘প্রজন্ম চত্বর'৷ সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আপাতত যুদ্ধাপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার অনুকূলে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনের বিরুদ্ধে আপিল যদি হয়, পরে যদি ফাঁসির আদেশ দেয় ট্রাইবুনাল, তাহলে কি দেশে বা বিদেশে এর কোনো প্রতিক্রিয়া হতে পারে? দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্না বললেন, কোথাও তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া হবে বলে তিনি মনে করেন না৷
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন