ইসলামী ব্যাংকে পরিবর্তন
৯ জানুয়ারি ২০১৭দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি সরকারের বড় বড় প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ এছাড়া ‘হিন্দু-মুসলমান সকলের অংশগ্রহণে’ ব্যাংকের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করার ঘোষণাও দিয়েছে আরাস্তু খান৷
চেয়ারম্যান ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান এবং এমডি পদেও পরিবর্তন এসেছে৷ ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান৷ আর জ্যেষ্ঠ ডিএমডি মাহবুবুল আলম হয়েছেন নতুন ভারপ্রাপ্ত এমডি৷
প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত-নিয়ন্ত্রিত হিসেবে পরিচিত ইসলামী ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসার পেছনে বিদেশি অংশীদারদের আগ্রহই মূল কারণ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত৷
এদিকে, ইসলামী ব্যাংককে জামায়াতমুক্ত করতে এই পরিবর্তন বলে মনে করছে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম৷
এই পরিবর্তনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অনেকে৷ যেমন সাংবাদিক প্রবীর সিকদার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও পরিচালন নীতিমালায় ব্যাপক পরিবর্তন আসায় আমরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিবেচনায় দারুণ স্বস্তি পেয়েছি৷’’ সে কারণে ‘দৈনিক বাংলা ৭১’, অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ’ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ত্রৈমাসিক ‘উত্তরাধিকার ৭১’ অতীতে ইসলামী ব্যাংকের বিজ্ঞাপন গ্রহণ না করলেও এখন নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
তবে শুধু শীর্ষ পদে রদবদল করলেই ব্যাংকটি জামায়াতমুক্ত হয়ে যাবে কিনা সে প্রশ্ন তুলেছেন সুলতান মির্জা৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘... জন্মের পর থেকে যে ব্যাংক দেশবিরোধী জামায়াত রাজাকার চক্রের হাতে গড়া, এমনকি জন্মলগ্ন থেকে গতকাল পর্যন্ত ব্যাংকের নিয়োগে জামায়াত-শিবির আদর্শের ব্যক্তিরা চাকরি পেয়ে চাকরি করছে, সেই ব্যাংকের শুধুমাত্র পরিচালনা বোর্ড রাজাকার জামায়াতমুক্ত হলেই সম্পূর্ণ ব্যাংক জামায়াত-শিবির মুক্ত হবে?’’ মির্জা মনে করছেন সেটি (জামায়াতমুক্ত) হবে না৷ তাই কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে ইসলামী ব্যাংক পুনর্গঠন করার প্রস্তাব করেছেন তিনি৷
ইয়াসিন আরাফাত বাপ্পী লিখেছেন, ‘‘ইসলামী ব্যাংক এতদিন জামাতি প্রতিষ্ঠান ছিল৷ তাই আওয়ামী লীগ সমর্থকদের কাছে ইসলামী ব্যাংক ছিল জঘন্য ও হিংসার ব্যাংক৷ একই ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব এখন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে৷ তাই এখন তাদের কাছে প্রিয় ব্যাংক হয়ে গেল৷ এভাবেই রাজনৈতিকভাবে আমরা প্রত্যেকটা কর্মকান্ডে ভালো-মন্দ প্রতারিত হই৷’’
তবে ড: আসিফ নজরুল মনে করছেন, ‘‘(ইসলামী ব্যাংক) জামায়াতে ইসলামীমুক্ত করাটা হচ্ছে ভান-ভনিতা৷ আমি বিশ্বাস করি, ইসলামী ব্যাংক দখল করা হয়েছে আসলে একে লুটেপুটে খাওয়ার জন্য৷’’ একই মন্তব্য শরিফ আহমেদের৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আসল কথা জামায়াতমুক্ত করা নয়৷ সোনালী ব্যাংকসহ অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের মতো টাকা লুট করার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে৷’’
আবু নাসের লিখেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগের জন্য দখলের ইতিহাস নতুন নয়৷ কিন্তু পরিণতি সুখকর নয়৷ একটা প্রতিষ্ঠানও তারা চালাতে পারে নাই৷ সবাই চাকরি হারিয়েছে৷ অবশেষে তা পরিত্যক্ত হয়েছে৷ সরকারি নিলামে পানির দামে জায়গার মালিক হয়েছে দলের লোকেরা৷’’
এদিকে, ইসলামী ব্যাংকের পর এবার কমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত৷ সোমবার দুপুরে সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান৷
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷