মন্দায়ও প্রসারমান ইসলামী ব্যাংকিং
১৪ জুন ২০১০পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে দেখা যায়, বিশ্বের ৫০০টি ইসলামী ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ ২০০৯ সালে বেড়েছে ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ৷ এ তথ্য সিঙ্গাপুরভিত্তিক ইসলামিক ব্যাংক অফ এশিয়ার৷ ধারণা করা হচ্ছে, ইসলামী ব্যাংকগুলোর সম্পদের পরিমাণ এই বছরই ১ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করবে – যা বিশ্বের ব্যাংক সম্পদের ১ শতাংশ৷
তবে এই সাফল্যেও আত্মতুষ্টির কোনো কারণ দেখছেন না বাহরাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রাশিদ আল মারাজ৷ তিনি সোমবার সিঙ্গাপুরে এক অনুষ্ঠানে বলেন, এখনই খুশি হওয়ার কিছু নেই৷ যদি এ ব্যবস্থার ভিত মজবুত করা যায়, তবে সামনে সোনালী ভবিষ্যতের হাতছানি৷ তাই আমাদের অনেক কাজ বাকি৷ একই কথা বললেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নাসের আল সুবাইদিও৷
ইসলামী ব্যাংক চলে মূলত শরিয়া আইন ধরে৷ তবে আইন নিয়ে মতভেদ রয়েছে ধর্মতাত্ত্বিকদের৷ যার প্রভাব পড়েছে ব্যাংক ব্যবস্থায়ও৷ আল মারাজ বলেন, শরিয়া আইন নিয়ে একেক জন একেক ধরণের কথা বলেন, যা একটা সমস্যা৷ সারা বিশ্বে এক নিয়মে কাজ যেন চালানো যায়, সে চেষ্টা করতে হবে৷
মালয়েশিয়ার মে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইব্রাহিম হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট পরিসরেই ইসলামী ব্যাংকগুলোর কাজ৷ গ্রাহক আকর্ষণের জন্য কাজের ক্ষেত্র আরো বাড়াতে হবে৷ ইসলামী ব্যাংকিংয়ের আরো একটি দুর্বলতা চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷ এটি হলো, নতুন নতুন বিষয় সংযোজনের অভাব৷ এছাড়া ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণার ঘাটতিও দেখছেন অনেকে৷
আবাসন খাতের খেলাপি ঋণ নিয়ে অন্য ব্যাংকগুলোর যখন টলমলো অবস্থা, তখন ইসলামী ব্যাংকগুলোও এ খাতের দিকে ঝুঁকছে৷ তবে এই ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন বাহরাইনের গভর্নর আল মারাজ৷
মন্দার ধাক্কা ইসলামী ব্যাংকগুলোর গায়ে লাগেনি৷ বরঞ্চ এই সঙ্কট একটা সুযোগ এনে দিয়েছে বলেই মনে করেন ইসলামিক ব্যাংক অফ এশিয়ার মহাপরিচালক তান জে উয়ান৷ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এশিয়ার বাইরে ইউরোপে ঢোকার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি৷ আর প্রসার বাড়লেও সামনে যে বড় চ্যালেঞ্জ তা মনে করিয়ে দিতেও ভুললেন না তিনি৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন