ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবে ব্রিটেন
৮ মে ২০১৯ব্রেক্সিট নিয়ে লাগাতার অচলাবস্থা যে ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলতে পারে, সে বিষয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-সহ অনেক মহল৷ তা সত্ত্বেও তাঁর টোরি দল ও সংসদে ব্রেক্সিটপন্থিরা কোনো সমাধানসূত্র সম্পর্কে ঐকমত্যে আসতে পারেননি৷ সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে বিরোধী লেবার দলের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে টোরি দল৷ কিন্তু প্রায় ৪ সপ্তাহ পরও সে ক্ষেত্রে কোনো সাফল্য আসেনি৷
এই অবস্থায় মঙ্গলবার ব্রিটেনের সরকার জানিয়ে দিয়েছে, সে দেশকে আগামী ২৩শে মে আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে হবে৷ উপ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত ডেভিড লিডিংটন এই ঘোষণা করে বলেন, নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শেষ পর্যন্ত ২রা জুলাই ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আসন গ্রহণ করতে হবে না বলে তিনি আশা করছেন৷ ২০শে জুলাই সংসদের গ্রীষ্মকালীন বিরতির আগেই ব্রেক্সিটের প্রশ্নে ঐকমত্য সম্ভব হবে বলে মনে করেন লিডিংটন৷ প্রধানমন্ত্রী নিজে এই সিদ্ধান্তের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই জোটের পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া ব্রিটেনের পক্ষে অত্যন্ত অস্বস্তিকর বিষয়৷ তার উপর সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচনে ক্ষমতাসীন টোরি ও বিরোধী লেবার দলের খারাপ ফলাফলের পর দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি এত দ্রুত আবার ভোটারদের মুখোমুখি হতে আগ্রহী নয়৷ একদিকে সদ্য গঠিত ব্রেক্সিট পার্টি, অন্যদিকে ইউরোপপন্থি লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও চেঞ্জ ইউকে দল এই নির্বাচনে লাভবান হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এদিকে মঙ্গলবারই টোরি দল বিরোধী লেবার দলের সঙ্গে আবার ব্রেক্সিট সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করেছে৷ আলোচনা ‘গঠনমূলক' ও ‘বিবিধ' ছিল বলে সরকার জানিয়েছে৷ বুধবারও আলোচনা চলবে৷ তবে লেবার দল অভিযোগ করেছে, যে টোরি দল এখনো কোনো বিষয়ে ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়৷
ক্ষমতাসীন টোরি দলের মধ্যে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে৷ পৌর নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের পর প্রধানমন্ত্রী মে মন্ত্রিসভার সদস্যদের বলেছেন, বিরোধীদের সঙ্গে এখনো রফা না হলেও জনসাধারণ দুই দলের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছেন৷ তাঁরা চান, দুই প্রধান দল ব্রেক্সিট কার্যকর করুক৷ তবে দলের ব্রেক্সিট-বিরোধী সদস্যরা মনে করেন, ইউরোপপন্থিদের বেশি ভোট দিয়ে মানুষ বরং ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন৷
ব্রেক্সিট চুক্তির প্রতি সমর্থনের পূর্বশর্ত হিসেবে লেবার দল ইইউ-র সঙ্গে স্থায়ী শুল্ক ইউনিয়নের যে দাবিতে অটল রয়েছে, টোরি দলের পক্ষে তাতে সায় দেওয়া কঠিন৷ কারণ সে ক্ষেত্রে দলের একটা বড় অংশ বিদ্রোহ করতে পারে৷ অন্যদিকে লেবার দলের একাংশ নতুন গণভোটের মাধ্যমে যে কোনো সমাধানসূত্র অনুমোদনের দাবি করছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)