1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমফান বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ দেখবেন মোদী

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
২১ মে ২০২০

আমফান পশ্চিমবঙ্গের একটা বড় অংশকে ধ্বংস করে চলে গিয়েছে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মোদী আকাশ থেকে সেই ধ্বংসের ছবি দেখবেন।

https://p.dw.com/p/3cZdr
ছবি: Reuters/R. De Chowdhuri

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, সকাল দশটা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী দমদম বিমানবন্দরে নামবেন। তারপর সেখান থেকে তিনি আকাশপথে দেখবেন আমফানের তাণ্ডবের ছবি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকবেন। তারপর তাঁরা একটি প্রশাসনিক বৈঠকেও যোগ দিতে পারেন। 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আগেই বলেছিলেন, তিনি চান প্রধানমন্ত্রী একবার নিজে পরিস্থিতি দেখে যান। তিনি খুব দ্রুত কেন্দ্রের কাছ থেকে অর্থসাহায্য়ও চেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এক হাজার কোটি টাকার ত্রাণ ও পুনর্তবাসন তহবিল তৈরি করেছেন। সেই ঘোষণা করার সময় তিনি বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছি, ওদের বিপর্যয়-তহবিল থেকে যেন অবিলম্বে অর্থসাহায্য করে। পাঁচশো দিন পরে টাকা পেলে লাভ নেই। এখনই টাকা পাওয়া দরকার।'' তাছাড়া  মৃতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী অবশ্য আগেই টুইট করে বলেছিলেন, সারা দেশ এখন পশ্চিমবঙ্গের পাশে আছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে সব  ধরনের চেষ্টা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপর তিনিও  টুইট করে রাজ্যকে সাাহায্য করার কথা জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গকে তছনছ করে দেওয়ার  পরও সকাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে  কোনও বার্তা না আসায় বিরোধী রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো বিষ্ময় সৃষ্টি হয়েছিলো  প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইটের পর সেই বিতর্কের অবসান হয়। তবে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী এবং তাঁর মেয়ে প্রিয়ঙ্কা অবশ্য গতরাতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।  

আমফান বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের জন্য এখন বিপুল পরিমাণ আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার রাতেই জানিয়ে দিয়েছেন, করোনার পর রাজ্যের হাতে টাকা নেই। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার যেন রাজনৈতিক দিক থেকে বিষয়টি না দেখে। মানবিকতার দিক থেকে দেখে। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ঢালাও অর্থ সাহায্য প্রত্যাশা করছেন তিনি। এমনকী বিশ্বের সব সংস্থার কাছেও তিনি সাহায্যের আবেদন করেছেন।

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধের অপেক্ষা করছেন। রাজ্য সরকার জানাক, কতটা ক্ষয়ক্ষতিহয়েছে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অর্থাৎ, সেই বিখ্যাত সরকারি মনোভাব। পশ্চিমবঙ্গের বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেলো, অথচ, কেন্দ্র এখনও প্রতিক্রিয়াহীন।

এমনিতে কেন্দ্রীয় সরকার তিন ভাবে সাহায্য করতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিপর্যয় মোকাবিলার তহবিল আছে। সেখান থেকে অবিলম্বে কিছু অর্থ পশ্চিমবঙ্গকে দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে যাবে। তারা ক্ষয়ক্ষতি দেখে কেন্দ্রীয় সরকারকে একটা রিপোর্ট দেবে। তার ভিত্তিতে কেন্দ্র অর্থ সাহায্য করবে রাজ্যকে। তবে তার জন্য সময় লাগবে। তৃতীয় পন্থা হলো, জিএসটি-তে সেস বসিয়ে সেই অর্থ দেওয়া। নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বিজনেস এডিটর জয়ন্ত রায়চৌধুরি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কেরালায় কিছুদিন আগে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিলো। তখন রাজ্য সরকার জিএসটিতে সেস বসাতে বলেছিলো। কিন্তু কেরালার অনুরোধ রাখা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ অনুরোধ করলে তা রাখা হবে কি না সন্দেহ।''

সেন্ট্রাল বোর্ড অফ কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইসের প্রাক্তন প্রধান সুমিত দত্ত মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''পশ্চিমবঙ্গে যা হয়েছে, তার জন্য অবশ্যই জিএসটি-তে সেস বসানো উচিত।''  এমনকী এটাকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করা উচিত। প্রবীণ সাংবাদিক জোসেফ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কেন্দ্র আরেকটি ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে সাহায্য করতে পারে। সেটা হলো জিএসটি-বাবদ রাজ্যের পাওনা টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া।''

পন্থা অনেক। কেন্দ্রীয় সরকার কীভাবে পশ্চিমবঙ্গকে সাহায্য করবে তা অদূর ভবিষ্যতে স্পষ্ট হবে।

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি গৌতম হোড়৷
গৌতম হোড় ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি৷