আবারও সংঘর্ষ, প্রাণহানি
৩ মার্চ ২০১৩ঢাকায় স্থাপিত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রথম রায় ঘোষণা করেন গত ২১ জানুয়ারি৷ যুদ্ধাপরাধের দায়ে আবুল কালাম আজাদকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা৷ সেই থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫৬৷ পুলিশের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি৷
নিহতের এই সংখ্যার মধ্যে ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন গত তিনদিনে৷ বৃহস্পতিবার জামায়াতের সহ-সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল৷ সাঈদীর বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্মভিত্তিক নিগ্রহ এবং ধর্ষণের অভিযোগ আদালতে প্রমাণ হয়েছে৷ কিন্তু রায় ঘোষণার পর সারা দেশে জামায়াত তাণ্ডব শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে৷
৭৩ বছর বয়সি সাঈদী হচ্ছেন তৃতীয় ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল৷ যুদ্ধাপরাধের এই বিচার প্রক্রিয়াকে ইসলামপন্থিরা দেখছেন ভিন্নভাবে৷ তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে পুরনো ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে, ন্যয়বিচার করা হচ্ছে না৷
এদিকে, বাংলাদেশের বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র পেট্রিক ভেনট্রেল বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেওয়া মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার, তবে আমরা বিশ্বাস করি সহিংসতা কখনোই জবাব হতে পারে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, যুদ্ধাপরাধ এবং নৃশংসতা যারা করেছেন, তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা গুরুত্বপূর্ণ৷ তবে এই বিচার প্রক্রিয়া হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ৷''
যুক্তরাষ্ট্রের এই বক্তব্যের একদিন পরই আবারো সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো বাংলাদেশে৷ বার্তাসংস্থা এএফপি'র দাবি, চট্টগ্রামে জামায়াতের সমর্থকদের উপর পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ ব্যক্তি৷ তবে জার্মান বার্তাসংস্থা ডিপিএ বলছে, মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে দুই৷
পুলিশ জানিয়েছে, জামায়াত সমর্থকরা একটি মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাইলে ও পুলিশের উপর পাথর এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করলে তারা পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়েন৷ চট্টগ্রামের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম এই বিষয়ে এএফপিকে বলেন, ‘‘আমরা গুলি করতে বাধ্য হয়েছি৷ সংঘর্ষে তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন৷ এছাড়া পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন৷''
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরো কয়েকজন জামায়াত এবং বিএনপি নেতার বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে৷