লিবিয়ার বিদ্রোহীদের মার্কিন স্বীকৃতি, গাদ্দাফির নাকচ
১৬ জুলাই ২০১১লিবিয়ার সংকট সমাধানে নানা পন্থা নিয়ে ভাবছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী৷ এসব গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে লিবিয়া কন্টাক্ট গ্রুপ৷ লিবিয়া যুদ্ধের সমাধান সূত্র খুঁজতে তুরস্কের ইস্তানবুলে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশের প্রতিনিধি মিলিত হলেন এই গ্রুপের চতুর্থ বৈঠকে৷ গাদ্দাফি সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহীদের পক্ষে বেশ কিছু ইতিবাচক মতামত উঠে এসেছে এই বৈঠকে৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন ঘোষণা দিলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র টিএনসি'কে লিবিয়ার বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে যাবে এবং সেই ভিত্তিতে তাদের সাথে যোগাযোগ ও সম্পর্ক রক্ষা করে চলবে৷'' হিলারি ক্লিন্টনের এই ঘোষণার পর টিএনসি'র পাশে দাঁড়াতে বেনগাজি শহরে মার্কিন দূতাবাস খোলার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সাংসদ৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের স্বীকৃতি দিল অস্ট্রেলিয়া৷ শনিবার অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেভিন রাড এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘গাদ্দাফি পরবর্তী লিবিয়ার নিরাপত্তা ও অগ্রগতি অর্জন এবং লিবিয়ার সাধারণ মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা ও মৌলিক পরিষেবা পৌঁছনোর ক্ষেত্রে টিএনসি'র সাফল্যকে অন্যান্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সাথে অস্ট্রেলিয়া স্বীকৃতি দেয়৷'' এদিকে, গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে তাঁর উপর সামরিক চাপ বৃদ্ধির ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ৷ এছাড়া তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেত দাভুতোঘলু বলেন, পবিত্র রমজান মাসে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের জন্য বিশেষ মানবিক সহায়তার প্রয়োজন৷ তাই গাদ্দাফি প্রশাসনের যেসব অর্থ আটকে রাখা হয়েছে তা বিদ্রোহীদের জন্য ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি৷
ইস্তানবুল বৈঠক থেকে বিদ্রোহীদের প্রতি এসব ইতিবাচক সিদ্ধান্তের পর তাদের জন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সহায়তার সুযোগ এবং পরিধি আরো একধাপ এগুলো বলে বিশ্লেষকদের ধারণা৷ তবে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর এসব তৎপরতার কাছে নতি স্বীকার করতে রাজি নন গাদ্দাফি৷ বিদ্রোহীদের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনাকে নাকচ করে দিয়ে তিনি একটি নতুন অডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন৷ এই বার্তায় তিনি তাঁর ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘এসব তুচ্ছ স্বীকৃতি তোমাদের পদতলে৷ তোমরা এর সমুচিত জবাব দাও, এগুলোকে ভূলুণ্ঠিত করো৷'' গাদ্দাফির হুঁশিয়ারি, ‘‘আমার নিজের জীবন দিয়ে আমি তোমাদের মুক্ত করবো৷ শেষ পর্যন্ত আমি যুদ্ধ চালিয়ে যাবো৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী