বিদ্রোহীদের সঙ্গো আলোচনার এটাই উত্তম সময়: লংগ্
১১ জুলাই ২০১১ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল বিএমএফ টিভি'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লংগ্ বলেন, মুয়াম্মার গাদ্দাফির পরাজয়ের জন্য বিদ্রোহীদের অপেক্ষা করা একেবারেই উচিৎ নয়৷ তাই গাদ্দাফি এবং বিদ্রোহী – দু'পক্ষকেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স৷ বলেন ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী৷
শুধু তাই নয়, লিবিয়ার অন্তর্বর্তী জাতীয় পরিষদ বর্তমানে সমঝোতা থেকে বহু দূরে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন লংগ্৷ তাই লিবিয়া সমস্যার একটা বাস্তবসম্মত সমাধানে আসতে দু'পক্ষের জরুরি ভিত্তিতে এক টেবিলে বসাটা অত্যন্ত আবশ্যক হয়ে উঠেছে বলে জানান তিনি৷
খুব স্বাভাবিকভাবেই, ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এ মন্তব্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র৷ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রাসঙ্গিকতা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র৷ তাছাড়া, গাদ্দাফি যে আর বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না – সেই বিশ্বাসও অটল যুক্তরাষ্ট্রের৷ তবে ক্ষমতার এই পরিবর্তন ঠিক কীভাবে হবে – সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র লিবিয়ার নাগরিকদের, একথাও বলা হয়েছে বিবৃতিটিতে৷ এছাড়া, লিবিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার জন্য সামরিক জোট ন্যাটোর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং ন্যাটো গাদ্দাফির ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছে ওবামা প্রশাসন৷
এদিকে, সোমবার আলজেরিয়ার একটি সংবাদপত্র গাদ্দাফি-পুত্র সেইফ আল-ইসলামের এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে৷ সাক্ষাৎকারে সেইফ উল্লেখ করেন যে, তাঁর পিতার সরকার ইতিমধ্যেই ফরাসি সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করেছে৷ অবশ্য সেই সমঝোতা আলোচনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে নয়, মূলত ফ্রান্সের সঙ্গে বলেই জানিয়েছেন গাদ্দাফি-পুত্র সেইফ আল-ইসলাম৷ তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকেলা সার্কোজি'র নাম উল্লেখ করে জানান যে, ফ্রান্স বলেছে, ত্রিপোলির সাথে সমঝোতা হলে বিদ্রোহী পরিষদকে যুদ্ধ বিরতির জন্য চাপ দেবে তারা৷
সেইফ আল-ইসলাম আরো জানান, ফরাসি প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো তাদের এক দূত জানিয়েছে যে, এ বিষয়ে প্যারিসের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত পরিষ্কার৷ সার্কোজির উদ্ধৃতি দিয়ে সেইফ বলেন, ফ্রান্সের কথায় তারা বিদ্রোহীদের জাতীয় পরিষদ তৈরি করেছে৷ তাই তাদের সমর্থন, টাকা ও অস্ত্র ছাড়া বিদ্রোহী পরিষদের কোন অস্তিত্বই থাকবে না৷
গাদ্দাফি-পুত্রের এ মন্তব্যের পর তাৎক্ষণিকভাবে ফ্রান্সের তরফ থেকে কোনোরকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও, গাদ্দাফির সঙ্গে সরাসরি কোনো যোগাযোগ হয় নি বলেই সোমবার জানিয়েছে ফ্রান্স৷
প্রসঙ্গত, গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সোচ্চার পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে ফ্রান্স অন্যতম৷ তবে ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য লিবিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা শক্তির ক্রমবর্ধমান হতাশার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক