লংগদুর সংবাদ ব্লক করার অভিযোগ
৬ জুন ২০১৭গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার ৭নং ইউনিয়ন শাখার যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ উদ্ধার করা হয়৷ স্থানীয় পুলিশ জানায়, দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে যায়৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লংগদুতে আদিবাসীদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করা হয়, যার খবর প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম৷
তবে কিছু সংবাদ বাংলাদেশে ব্লক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে ইন্টারনেট গেটওয়েকে পাঠানো বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি'র এক কর্মকর্তার একটি ইমেলের কপি ডয়চে ভেলের হস্তগত হয়েছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, সিএইচটি নিউজ, পার্বত্য নিউজ এবং ঢাকা টাইমস নামক তিনটি অনলাইন পত্রিকার ছয়টি নিউজ লিংক ব্লক করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে বলা সবগুলো সংবাদই লংগদুর অস্থিরতা সংক্রান্ত৷
এই প্রসঙ্গে বিটিআরসি'র সেই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজ ব্লক করা সংক্রান্ত ইমেলটি পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেননি৷ আর তাঁর অনুরোধে বিটিআরসি'র একাধিক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেও এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন৷
উল্লেখিত নিউজ লিংকগুলো আসলেই বাংলাদেশে ব্লক করা হয়েছে কিনা তা জানতে ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের পাঠকদের কাছে প্রশ্ন করা হয়৷ ফেসবুকে এই বিষয়ে মিশ্র উত্তর পাওয়া গেছে৷ তবে ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপন নিশ্চিত করেছেন যে ঢাকা থেকে লিংকগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না৷
এই বিষয়ে জানতে চাইলে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত পাইচিংমং মারমা বলেন, ‘‘আওয়ামী সরকার হোক আর সামরিক সরকার - সব সরকারই রাষ্ট্রের আদিবাসী দমন-পীড়ন এবং সেটলারদের নিরংকুশ দখলবাজির রাষ্ট্রীয় পলিসি বাস্তবায়ন করে আসছে৷ পাহাড়ে যখনই কোন গ্রস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন ঘটে তখনই মিলিটারি এজেন্সি এবং সরকারী এজেন্সিগুলো সেইসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়৷''
আদিবাসীদের অধিকারের বিষয়ে প্রচারণা চালানো এই ব্লগার জানান যে, এর আগেও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘লোকচক্ষুর আড়ালে কত আদিবাসী জনপদ বিরান হয়ে যাচ্ছে সেটলারদের নিপীড়নে, সেটা কেউই জানে না৷''
এদিকে, লংগদুতে আদিবাসীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ এবং সেনা সদস্যদের ভূমিকা কী ছিল তার সুষ্ঠু তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংগঠনটি৷