জাতিসংঘে পাঁচ দফা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭বাংলায় দেয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দেখতে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানান৷ বাংলাদেশ বর্তমানে মিয়ানমার থেকে আসা আট লক্ষের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে বলে জানান তিনি৷ এর মধ্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার হিসেব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চার লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷
এই রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাঁদের নিজ দেশে নিরাপদ ও সম্মানের সঙ্গে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন হাসিনা৷ তবে রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমারে ফিরতে না পারে সেজন্য সীমান্ত এলাকায় ল্যান্ডমাইন স্থাপন করা হয়েছে বলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি৷
রাখাইন রাজ্যে নৃশংসতা বন্ধে স্ব-উদ্যোগী হওয়ায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী৷
এদিকে, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে পাঁচটি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি৷ এগুলো হলো:
- অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা
- অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা
- জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা
- রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা
- কোফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা
তবে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত মিয়ানমারে জাতিসংঘের উদ্যোগে সুরক্ষা বলয় গড়ে তুলতে চাইলে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন হবে৷ কিন্তু সেখানে মিয়ানমারের সমর্থক চীনের ভেটো দেয়ার ক্ষমতা থাকায় অনুমোদন পাওয়া কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
উল্লেখ্য, রাখাইন রাজ্যে চলা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ৷ আর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এক ধাপ এগিয়ে একে ‘গণহত্যা’ বলে মন্তব্য করেছেন৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)