1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে কারণে অন্যদের চেয়ে আলাদা ‘ড্রিমলাইনার’

৫ ডিসেম্বর ২০১১

বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করেছে গত অক্টোবর মাসে৷ গতিতে নতুনত্ব নয় বরং যাত্রাপথে স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে গুরুত্ব দিয়েই তৈরি হয়েছে এই বিমান৷ এটি একইসঙ্গে জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘযাত্রার উপযোগী৷

https://p.dw.com/p/13Mcb
The second Boeing Co. 787 to be delivered to All Nippon Airways (ANA) outside the assembly plant in Everett, Wash. on Sunday, Sept. 25, 2011. ANA is the first customer to take delivery of the 787. (Foto:John Froschauer/AP/dapd)
৭৮৭ ড্রিমলাইনারছবি: dapd

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যাত্রা শুরু করল বোয়িং ৭৮৭ ড্রিম লাইনার৷ মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এই ড্রিমলাইনারের পেছনে খরচ করেছে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ বিভিন্ন রকম গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ৭৮৭ এবার যাত্রী সেবায় নিয়োজিত৷ কয়েকটি বিমান সংস্থা ইতিমধ্যে ড্রিমলাইনারকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার শুরু করেছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমান যাত্রায় নতুন এক যুগের সূচনা করেছে বোয়িং৷ প্রশ্ন জাগতে পারে, কী আছে ড্রিমলাইনারে যা অন্য সবার চেয়ে এটিকে আলাদা করেছে? চলুন তাহলে বোয়িং'এর এই নব সংযোজনের বিশেষত্বগুলোর দিকে নজর দেওয়া যাক:

প্লাস্টিক বিমান (একধরনের)

ড্রিমলাইনার তৈরিতে ৫০ শতাংশ যৌগিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে৷ ফলে গতানুগতিক অন্যান্য বিমানের চেয়ে এটি হালকা৷ সাধারণ বিমানে অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবহার অনেক বেশি করা হয়, তাই ওজনও বেশি হয়৷ অবশ্য বিমানে আগেও যৌগিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু তার পরিমাণ খুব বেশি ছিল না৷ ড্রিমলাইনার চলতি বাজারের অন্যান্য বিমানের চেয়ে হালকা, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী৷

Boeing's 787 Dreamliner rolls down the runway during taxi tests on Saturday Dec. 12, 2009 at Paine Field in Everett, Wash. The largely composite airplane is scheduled for its maiden flight next week. (AP Photo/Seattle Post-Intelligencer, Joshua Trujillo) ** MAGS OUT; NO SALES; SEATTLE TIMES OUT; TV OUT; MANDATORY CREDIT **
৭৮৭ ড্রিমলাইনারছবি: AP

ভেতরের পরিবেশ

অন্যান্য বিমানের তুলনায় ড্রিমলাইনারে কেবিন প্রেশার এবং আর্দ্রতা বেশি৷ ফলে এই বিমানের যাত্রীদের কাছে মনে হবে, তাঁরা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ছয় হাজার ফুট উপরে আছেন৷ অন্যান্য যাত্রীবাহী বিমানের কেবিনে সাধারণত ৮ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থানের মত পরিবেশ তৈরি করা হয়৷ বোয়িং জানিয়েছে, কেবিনের এই পরিবেশ বিমানযাত্রীদের কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা থেকে রেহাই দেবে৷ দীর্ঘযাত্রায় আরোহীরা আগের মতো ক্লান্তি অনুভব করবেন না৷ চোখ শুকিয়ে যাওয়া কিংবা মাথাব্যথার হারও আগের তুলনায় কমে যাবে৷

স্বাচ্ছন্দ্যে অবস্থান

বিমানে চড়লে শুরুতেই অনেকের চোখে একটি বিষয় ধরা পড়ে৷ আসনগুলো একটি অপরটির খুব কাছে চাপানো৷ বসার পর সামনের দিকে একেবারেই জায়গা থাকে না৷ বোয়িং-এর প্রধান পাইলট ব়্যান্ডি নেভিল জানালেন, ড্রিমলাইনারে আরোহীরা স্থানস্বল্পতা একেবারের অনুভব করবেন না৷ আরোহীদের মনে হবে না, যে তারা বোধহয় একটি টিউবের মধ্যে চাপাচাপি করে ঢুকে পড়েছেন৷ ড্রিমলাইনারের আসনে পর্যাপ্ত জায়গার পাশাপাশি মাথার উপরে লাগেজ রাখার তাকটিও অন্য যেকোন বিমানের তুলনায় বড়৷

জ্বালানি সাশ্রয়ী

বোয়িং ৭৮৭ একই আকৃতির অন্য বিমানের চেয়ে ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ী৷ এই সুবিধার কারণে উড়াল সংস্থাগুলোর খরচ অনেক কমবে এবং অপেক্ষাকৃত বেশি দূরত্বের গন্তব্যে বিরতিহীনভাবে ড্রিমলাইনার ব্যবহার সম্ভব হবে৷ বোয়িং কর্মকর্তা পল শেরিড্যান এই প্রসঙ্গে বলেন, বোয়েং ৭৮৭ এর আকারের একটি বিমান সামান্য জ্বালানি সাশ্রয়ী হলেই তা সামগ্রিক খরচের উপর বড় প্রভাব ফেলতে সক্ষম৷ এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, বিরতিহীন দীর্ঘভ্রমণের সুবিধা অনেক যাত্রীই নিতে চাইবেন৷ কেননা এটি সময়সাশ্রয়ীও বটে৷

ককপিটের বিশেষত্ব

বিমানের পাইলটদের জন্যও বিশেষ কিছু সুবিধা যোগ হয়েছে ড্রিমলাইনারে৷ নেভিল জানান, এই বিমান নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ৷ তাছাড়া আগে যেসব তথ্য দেখতে পাইলটদেরকে উপরের দিকে তাকাতে হত, সেগুলো এই বিমানে পাওয়া যাবে সামনের গ্লাসেই৷ ফলে বাইরের দিকে নজর রাখতে রাখতেই অন্যান্য তথ্যও চোখের সামনে ভেসে উঠবে৷

বড় জানালা

ড্রিমলাইনের জানালাগুলো ১৯ ইঞ্চি লম্বা৷ একই আকারের অন্যান্য বিমানের তুলনায় এটির জানালা ত্রিশ শতাংশ বড়৷ মজার বিষয় হচ্ছে, এসব জানালায় গতানুগতিক সেই প্লাস্টিক শেডের দেখা মিলবে না৷ বরং এটি অনেক আধুনিক৷ ইলেকট্রনিক বোতাম চেপেই জানালা বন্ধ করা যাবে কিংবা প্রয়োজন অনুযায়ী ছায়া তৈরি করা যাবে৷ বিমান ক্রুরাও জানালাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন দূর থেকে৷ ফলে আগের মতো, হঠাৎ সূর্যের আলোয় আরোহীর ঘুম ভাঙার সুযোগ থাকছে না ড্রিমলাইনারে৷

সর্বশেষ যে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য সেটি হচ্ছে, ড্রিমলাইন ৭৮৭ এর সকল বিমানকেই একইধরনের রাখার চেষ্টা করা হয়েছে৷ উড়াল সংস্থাগুলো চাইলে কেবিনে পরিবর্তন আনতে পারেন, কিন্তু সেই পরিবর্তন সীমিত পর্যায়ে রাখতে চেষ্টা করেছে বোয়িং৷

ও হ্যাঁ, ড্রিমলাইনারে চড়লে কথা একটু আস্তে বলতে হবে৷ অন্য বিমানের চেয়ে এটি শব্দ করে কম৷ কেবিনে আপনার কথা তাই সহজেই একটু দূরের কেউ শুনে ফেলতে পারেন৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য