1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সফল পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন

১৬ ডিসেম্বর ২০০৯

আধুনিক বিজ্ঞানের কারিশমায় প্রতিদিনই মানুষ পাখির মতো ডানা মেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে৷ তবে পরিবেশ বান্ধব যাত্রীবাহী 'সবুজ' জেট বিমানের আকাশে উড়ার ঘটনাটি ঘটল ২০০৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর৷

https://p.dw.com/p/L3P2
মঙ্গলবার আকাশপানে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারছবি: AP

মার্কিন প্রতিষ্ঠান 'বোয়িং' এই ৭৮৭ জেট বিমান তৈরির কাজ শুরু করে ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে৷ নির্মাণের কাজ শেষ করতে প্রকৃতপক্ষে দু'বছরের বেশি দেরি হয়ে গেছে৷ তৈরির সময়েই নানা সমস্যায় পড়ে দুই বছরেরও বেশি দেরিতে অবশেষে আকাশে ডানা মেলল 'বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার' জেট বিমান৷ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টা ২৭ মিনিটে ওয়াশিংটনের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বোয়িং কারখানা পেইন ফিল্ড থেকে উড়াল দিয়েছিল আকাশে৷ তিন ঘন্টা উড্ডয়ন শেষে সেটি সফলভাবে অবতরণ করতেও সক্ষম হয়েছে৷ ফলে আশা করা হচ্ছে, ২০১০ সালের শেষ নাগাদ জাপানের বিমান সংস্থা অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের হাতে প্রথম বোয়িং ড্রিমলাইনার জেটটি তুলে দিতে পারবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান৷ জাপানের বিমান সংস্থার কাছে এটি হস্তান্তরের কথা ছিল ২০০৮ সালের মে মাসে৷

উৎপাদনের আগেই রেকর্ড পরিমাণ চাহিদা

ইতিমধ্যে ৫০ টি সংস্থা ৮৪০ টি বোয়িং ৭৮৭ বিমান কেনার জন্য তাদের চাহিদা জমা দিয়েছে৷ গত সপ্তাহে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স আরো ২৫টি বেশি বিমান কেনারও ঘোষণা দিয়েছে৷ গড়ে বোয়িং ৭৮৭ গোত্রের একেকটি বিমানের মূল্য পড়বে প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ ডলার৷ বোয়িং ৭৮৭ এর তিনটি ধরণ নিয়ে আসছে এর মার্কিন নির্মাতা সংস্থা৷ এর মধ্যে সর্বাধিক ২৯০ থেকে ৩৩০ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ৭৮৭-৩-এর৷ মাঝারি মানের ৭৮৭-৯ বিমানে যাত্রী ধরবে ২৫০ থেকে ২৯০ জন৷ আর সবচেয়ে ছোট মানের ৭৮৭-৮ বিমানের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ২৫০ জন যাত্রী৷ তবে ৭৮৭-৩ এবং ৭৮৭-৮ দু'টিরই দৈর্ঘ্য ৫৭ মিটার৷ অন্যদিকে, ৭৮৭-৯ বিমানটি ৬৩ মিটার দীর্ঘ৷

Der 787 Dreamliner von Boeing
রানওয়েতে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারছবি: AP

সর্বোচ্চ গতি এবং সর্বোচ্চ পাল্লা

যে জন্য বোয়িং বিমানের প্রতি এতো বেশি মনোযোগ তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিশ্বের যে কোন বিমানের চেয়ে এটির বেশি গতি৷ এর গতি ঘন্টায় ৯০০ কিলোমিটার তথা ৫৬০ মাইল৷ অথচ একই আকারের অন্য যে কোন বিমানের চেয়ে এর জ্বালানি পুড়বে ২০ শতাংশ কম৷ এই বোয়িং বিমান এক উড়ালে পেরোতে পারবে সাড়ে ছয় হাজার থেকে ষোল হাজার কিলোমিটার৷ এছাড়া, এটিই প্রথম বাণিজ্যিক বিমান যেটি ধাতব পদার্থের বদলে হাল্কা কম্পোজিট স্ট্রাকচার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে৷ আর সেকারণেই জ্বালানির ক্ষেত্রে এতটা সাশ্রয় বোয়িং বিমানে সম্ভব৷ প্রথম বোয়িং বিমান ৭৭৭ তৈরি করা হয়েছিল ১২ শতাংশ কম্পোজিট স্ট্রাকচার দিয়ে৷ কিন্তু ৭৮৭ বিমানটিতে ৫০ শতাংশই এই হাল্কা ওজনের কার্বন এবং টিটানিয়ামের কম্পোজিট স্ট্রাকচার৷

এরপরই বাজারে আসবে এ৩৫০

তবে বোয়িং ৭৮৭-ই শেষ কথা নয়৷ বোয়িং এর সাথে পাল্লা দিয়ে এ৩৫০ বিমান তৈরির জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস৷ ২০১৩ সাল নাগাদ তাদের সেই প্রচেষ্টা সফল হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ এ৩৫০ বিমানগুলোও নির্মাণ করা হচ্ছে কার্বন-কম্পোজিট উপাদান দিয়ে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী