বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সফল পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন
১৬ ডিসেম্বর ২০০৯মার্কিন প্রতিষ্ঠান 'বোয়িং' এই ৭৮৭ জেট বিমান তৈরির কাজ শুরু করে ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে৷ নির্মাণের কাজ শেষ করতে প্রকৃতপক্ষে দু'বছরের বেশি দেরি হয়ে গেছে৷ তৈরির সময়েই নানা সমস্যায় পড়ে দুই বছরেরও বেশি দেরিতে অবশেষে আকাশে ডানা মেলল 'বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার' জেট বিমান৷ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টা ২৭ মিনিটে ওয়াশিংটনের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বোয়িং কারখানা পেইন ফিল্ড থেকে উড়াল দিয়েছিল আকাশে৷ তিন ঘন্টা উড্ডয়ন শেষে সেটি সফলভাবে অবতরণ করতেও সক্ষম হয়েছে৷ ফলে আশা করা হচ্ছে, ২০১০ সালের শেষ নাগাদ জাপানের বিমান সংস্থা অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের হাতে প্রথম বোয়িং ড্রিমলাইনার জেটটি তুলে দিতে পারবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান৷ জাপানের বিমান সংস্থার কাছে এটি হস্তান্তরের কথা ছিল ২০০৮ সালের মে মাসে৷
উৎপাদনের আগেই রেকর্ড পরিমাণ চাহিদা
ইতিমধ্যে ৫০ টি সংস্থা ৮৪০ টি বোয়িং ৭৮৭ বিমান কেনার জন্য তাদের চাহিদা জমা দিয়েছে৷ গত সপ্তাহে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স আরো ২৫টি বেশি বিমান কেনারও ঘোষণা দিয়েছে৷ গড়ে বোয়িং ৭৮৭ গোত্রের একেকটি বিমানের মূল্য পড়বে প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ ডলার৷ বোয়িং ৭৮৭ এর তিনটি ধরণ নিয়ে আসছে এর মার্কিন নির্মাতা সংস্থা৷ এর মধ্যে সর্বাধিক ২৯০ থেকে ৩৩০ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ৭৮৭-৩-এর৷ মাঝারি মানের ৭৮৭-৯ বিমানে যাত্রী ধরবে ২৫০ থেকে ২৯০ জন৷ আর সবচেয়ে ছোট মানের ৭৮৭-৮ বিমানের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ২৫০ জন যাত্রী৷ তবে ৭৮৭-৩ এবং ৭৮৭-৮ দু'টিরই দৈর্ঘ্য ৫৭ মিটার৷ অন্যদিকে, ৭৮৭-৯ বিমানটি ৬৩ মিটার দীর্ঘ৷
সর্বোচ্চ গতি এবং সর্বোচ্চ পাল্লা
যে জন্য বোয়িং বিমানের প্রতি এতো বেশি মনোযোগ তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিশ্বের যে কোন বিমানের চেয়ে এটির বেশি গতি৷ এর গতি ঘন্টায় ৯০০ কিলোমিটার তথা ৫৬০ মাইল৷ অথচ একই আকারের অন্য যে কোন বিমানের চেয়ে এর জ্বালানি পুড়বে ২০ শতাংশ কম৷ এই বোয়িং বিমান এক উড়ালে পেরোতে পারবে সাড়ে ছয় হাজার থেকে ষোল হাজার কিলোমিটার৷ এছাড়া, এটিই প্রথম বাণিজ্যিক বিমান যেটি ধাতব পদার্থের বদলে হাল্কা কম্পোজিট স্ট্রাকচার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে৷ আর সেকারণেই জ্বালানির ক্ষেত্রে এতটা সাশ্রয় বোয়িং বিমানে সম্ভব৷ প্রথম বোয়িং বিমান ৭৭৭ তৈরি করা হয়েছিল ১২ শতাংশ কম্পোজিট স্ট্রাকচার দিয়ে৷ কিন্তু ৭৮৭ বিমানটিতে ৫০ শতাংশই এই হাল্কা ওজনের কার্বন এবং টিটানিয়ামের কম্পোজিট স্ট্রাকচার৷
এরপরই বাজারে আসবে এ৩৫০
তবে বোয়িং ৭৮৭-ই শেষ কথা নয়৷ বোয়িং এর সাথে পাল্লা দিয়ে এ৩৫০ বিমান তৈরির জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস৷ ২০১৩ সাল নাগাদ তাদের সেই প্রচেষ্টা সফল হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ এ৩৫০ বিমানগুলোও নির্মাণ করা হচ্ছে কার্বন-কম্পোজিট উপাদান দিয়ে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী