1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানব পাচার রোধে চুক্তি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ সেপ্টেম্বর ২০১৪

পাচারের শিকার – এমন ব্যক্তিদের উদ্ধার, প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করছে বাংলাদেশ, যা হবে চলতি সপ্তাহেই৷ জাতিসংঘের হিসেবে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখেরও বেশি নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1D4uS
গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখেরও বেশি নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়েছেছবি: AFP/Getty Images

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা জানিয়েছেন, আগামী ২ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে ৷ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সমঝোতা স্মারকে সই করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে৷ ‘ভিকটিম'-দের নিরাপত্তা দেয়া, গোপনীয়তা রক্ষা করা, নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী কম সময়ে দেশে ফেরানো এবং সমাজে পুনর্বাসনের চেষ্টা করাই এ সমঝোতার উদ্দেশ্য৷

মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়; সবচেয়ে বেশি পাচার হয় ভারতে৷ ভারত থেকেও পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসে৷ এ সম্পর্কে উভয় দেশই সচেতন৷ বর্তমানে কিছু কার্যক্রম চলছে, যেমন দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘ফোকাল পয়েন্ট' আছে৷ দুই দেশের মধ্যে একটি টাস্কফোর্সও পাচার ঠেকাতে কাজ করছে৷''

Menschenhandel Gewalt Frau Pakistan
দিনাজপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্ত পথ দিয়ে নারী ও শিশুদের পাচার করা হয়ছবি: DW

সচিব জানান, ‘‘সমঝোতা স্মারকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু গণ্য করা হবে৷ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যার যার দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ মানব পাচার বন্ধে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নেয়া হবে৷'' এছাড়া এই সমঝোতার আওতায় মানব পাচার বন্ধে দুই দেশের মধ্যে তথ্য বিনিময় করা হবে বলেও জানান তিনি৷

পাচার চিত্র

সম্প্রতি ভারতের কেরালা রাজ্যের কোচি জেলা পুলিশ বাংলাদেশি এক নারীকে উদ্ধার করার পর, বাংলাদেশি নারী ও শিশুদের ভারতে পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমে৷ কেরালা পুলিশের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভারতীয় একটি চক্র তাদের দালালদের মাধ্যমে নারী সংগ্রহ করছে৷ প্রতি নারীর জন্য দেয়া হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা৷ পরে ঐ নারীদের ভারতের মুম্বই, হায়দ্রাবাদ ও কলকাতায় পাচার করা হচ্ছে৷ ভারত থেকে পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যেও পাচার হয়৷ ভারতের মুম্বই, হায়দ্রাবাদ ও কলকাতা ভিত্তিক একটি নারী পাচার চক্র বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ‘নেটওয়ার্ক' গড়ে তুলেছে৷

এর আগে ভারতের একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার নারী ও শিশু ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হয়ে থাকে৷ আর ভারতীয় সমাজ কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী , বাংলাদেশের ১৮টি রুট দিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার নারী ও শিশু অবৈধ পথে ভারতে পাচার হচ্ছে৷

বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৪ হাজার ২২২ কিলোমিটার এবং মিয়ানমারের সাথে ২৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা রয়েছে৷ পাচারকারীরা বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করে নারী ও শিশুদের পাচার করে৷ উত্তরের দিনাজপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্ত পথ দিয়ে নারী ও শিশুদের পাচার করা হয়৷ ঐ অঞ্চলের সীমান্ত এলাকার ১১টি রুট দিয়ে নারী ও শিশু পাচার হয়ে থাকে৷

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৫ হাজার মানব পাচার হয়, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু৷ তাদের হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে তিন লাখের বেশি নারী ও শিশু পাচার হয়েছে ভারতে৷ তবে বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও-র দাবি, পাচারের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি৷

উল্লেখ্য, মানব পাচার প্রতিরোধে ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার একটি আইন করে, যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ এর আওতায় জেলা পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে মামলা পরিচালনার কথাও বলা হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান