ভাষা দিবসে বইমেলায় প্রাণের জোয়ার
২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯নবীন-প্রবীন, ছেলে-বুড়ো-- মেলায় সববয়সী দর্শনার্থীরই সমাগম ছিল৷ একুশে বইমেলায় ডয়চে ভেলে স্টলেও ছিল ভীষণ ভীড়৷ শনিবার এই স্টলে ডয়চে ভেলের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান গ্রেহেম লুকাস, ঢাকা প্রতিনিধি হারুন-উর-রশিদ স্বপনসহ ডয়চে ভেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই উপস্থিত ছিলেন৷ অসংখ্য দর্শক-শ্রোতার পাশাপাশি ভাষা দিবসে ডয়চে ভেলের স্টল পরিদর্শন করেন শিক্ষাবিদ ড. জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরিফিন সিদ্দিক, বাংলা একাডেমির পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ শাহেদ এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল৷
ভাষা আন্দোলনের সফলতা সম্পর্কে ড. সিদ্দিকী ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলার জায়গাটা এখনো কিছুটা যেন অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে৷ বিশেষ করে উচ্চস্তরে৷ আর যে কথাটা আমি সবসময়ই বলে থাকি যে, শিক্ষার বাংলা ভাষা নির্ভর যে মুলধারা তাঁর পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা নির্ভর আরেকটি ধারা যে দাড়িঁয়ে গেছে এবং আরো একটা ধারা আছে যেটা মাদ্রাসা নির্ভর ধারা-- এই যে তিনধারায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা চলছে, এটা কিন্তু আমাদের একুশের যে চাওয়া তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়৷ আমাদের চাওয়াটা ছিল বাংলা ভাষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা৷ সেটা আমাদের সংবিধানেও আছে৷ কিন্তু সেটা হচ্ছে না৷
তিনি বলেন, রাজনৈতিক আকাংখার কথা বললে, দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু গণতন্ত্রের প্রকাশের ক্ষেত্রে আমরা একটু একটু করে খুড়িয়ে খুড়িয়ে অগ্রসর হচ্ছি৷ বাঁধা পাচ্ছি, পিছিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাচ্ছি-- এইভাবে চলছে৷
সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন নিয়ে প্রফেসর শাহেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, সাংবিধানিকভাবে বলা আছে যে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করতে হবে৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেক জায়গাতে চালু হয়নি৷ যেমন আদালতে শুরু হয়েও থেমে গেছে, প্রশাসনেও খানিকটা হচ্ছে খানিকটা হচ্ছে না৷ শিক্ষাক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আমরা আবার ইংরেজির দিকে ঝুঁকে যাচ্ছি৷ এমনকি স্বাধীনতার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চস্তরে যে বিষয়গুলো বাংলায় পড়ানো শুরু হয়েছিল, সেটাতেও কিন্তু আবার আমরা অনেকটা ইংরেজির দিকে চলে যাচ্ছি৷ আমার মনে হয়, আমরা এখনো কোন সম্পূর্ণ শিক্ষানীতিতে পৌঁছতে পারি নি৷ আর তার ফলেই এটা হচ্ছে আরকি৷
আলোচকদের মতে, নিজ ভাষার শিক্ষাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শিক্ষা৷