ফেলানী হত্যা
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩আমার ব্লগে হাসান খান বাবু লিখেছেন, ‘‘ফেলানীর হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ আবার উত্তাল৷'' – এই শিরোনাম যে কল্পনাপ্রসূত তা বোঝা যাবে একটু পরেই৷ হাসান খান বাবু আরো লিখেছেন, ‘‘...লাখো জনতার কণ্ঠে একটিই দাবি, ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই৷ অমিয় ঘোষের ফাঁসি চাই৷ চমকে উঠবেন না৷ আসলে এসব আমার কল্পনা৷ বাস্তবে এরকম ঘটেনি৷ কিন্তু এরকম ঘটা কি উচিত ছিল না?''
‘‘৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লার মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি না হওয়াতে আমরা .... উত্তাল করে ফেললাম৷ আর বিএসএফ-এর মানবতাবিরোধী অপরাধে আমাদের শুধু ব্লগ আর ফেসবুকে প্রতিবাদ করেই দায়িত্ব শেষ৷ আসলে এভাবে তুলনা করা যদিও ঠিক হয়নি৷ কিন্তু না করেও পারলাম না৷ এটা ঠিক যে, রাস্তায় প্রতিবাদ করে অমিয় ঘোষের ফাঁসি হবে না৷ তবে ভবিষ্যতে সীমান্তে আরো কিছু প্রাণ বেঁচে যেতে পারে, কারণ, অমিয় ঘোষেকে খালাস দিয়ে বিএসএফ-কে হত্যার লাইসেন্স দেয়া হয়েছে৷'' এভাবেই স্পর্শকাতর বিষয়টিতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন আমার ব্লগের এই ব্লগার৷
আমার ব্লগের আরেক ব্লগার লিপি হায়দারের লেখার শিরোনাম, ‘‘ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার এবং সীমান্তে হত্যা বন্ধে জাগ্রত যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশের পক্ষের বাংলাদেশিরা৷'' যুক্তরাজ্য প্রবাসী এই ব্লগার সুদীর্ঘ লেখাটিতে লিখেছেন, ‘‘ফেলানী যখন গুলীবিদ্ধ হয় তখন সে বেঁচে ছিল, কিন্তু কেউ তাকে কাঁটাতারের বেড়া থেকে নামিয়ে আনেনি, সে পানি চেয়েছিল, একবিন্দু পানি তাকে কেউ দেয়নি, তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়নি৷ গুলি চালানো যায় এমন কোনো উস্কানিমূলক কাজ সে করেনি, তথাপি ফেলানীর হত্যাকারী নাকি নির্দোষ! নিয়মিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এভাবে বেড়ে চলেছে হত্যা৷''
ভারতের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন লিপি এবং তাঁর পরিচিত অনেক যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাঙালি৷ সেই খবরটি জানাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা সচেতন বাঙালি এই হত্যা বন্ধসহ, ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার চাই৷ আমরা চাই না ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কের ক্ষতি হোক, কিন্তু বন্ধুত্ব বজায় রাখতে আমরা এই হত্যার বিপক্ষে এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে৷ তাই আমরা যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাঙালিরা এক হয়ে ছিলাম এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদের পদক্ষেপ খুঁজতে৷'' সিধান্ত হয়েছে, আমরা স্বারকলিপি দেবো ভারতের হাইকমিশনারকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে এবং বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে, যাতে তারা এই হত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নেয় এবং ফেলানী হত্যার বিচারের প্রহসনের বিরুদ্ধে আপিল করে৷ আপিলে কাজ না হলে বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে৷ ‘‘...বিশ্বাস করছি বাংলাদেশের সকলে ফেলানী হত্যার বিচারের জন্য এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে এক হতে পারবেন এবং বাংলাদেশের সরকার এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে এই অমানবিক হত্যাকে ঘিরে যে জনরোষ তৈরি হয়েছে, তা প্রশমিত করতে সচেষ্ট হবেন৷''
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ