ক্ষতিপূরণ চান ফেলানীর বাবা
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩কুড়িগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের হত্যার রায়ে বিএসএফ-এর ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের এক জওয়ান অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয়া হয় গত ৬ই সেপ্টেম্বর৷ এরপর বুধবার ফেলানীর বাবা মো. নুরুল ইসলাম ডাকযোগে ভারতীয় হাইকমিশনে ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে চিঠি পাঠান৷
নুরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, তিনি সেই চিঠির ‘কপি' পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) এবং বাংলাদেশের আইন ও শালিস কেন্দ্রের কাছেও ডাকযোগে পাঠিয়েছেন৷ আবেদনে নুরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘২০১১ সালের ৭ই জানুযারি আমার কিশোরী কন্যা ফেলানী খাতুন বাংলাদেশ-ভারতের আন্তর্জাতিক সীমনা পিলার ৯৪৭-এর কাছে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়৷ ফেলানী নিরস্ত্র এবং একজন সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিক ছিল৷ বিএসএফ সদস্যরা স্বল্প দূরত্ব থেকে আমার উপস্থিতিতে গুলি ছুড়লে সে ঘটনাস্থলে নিহত হয়৷'
তিনি আরো লেখেন, ‘এ ঘটনার দুই বছর আট মাস পর ভারতের কোচবিহারে এক বিশেষ আদালতে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যের বিচার শুরু হয়৷ কিন্তু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷ আমি মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী একজন মানুষ৷ তাই বিশ্বাস করি আমার কন্যা হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে৷ আমি আশা করবো, ভারত সরকার তথা ভারতীয় জনগণ এ ব্যাপরে উদ্যোগ নেবে৷'
চিঠিতে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি আমার কন্যার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা (বিএসএফ) সরাসরি জড়িত৷ সে কারণে এর দায় ভারত সরকার তথা ভারতীয় জনগণের৷ উভয়ের কাছে আমার দাবি, আমার নিরীহ, নিরস্ত্র কন্যা ফেলানী খাতুনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিন এবং অকালমৃত্যুর শিকার ফেলানীর জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করুন৷'
নুরুল ইসলাম জানান, তাঁর আশা ভারতীয় কতৃপক্ষ তাঁর আবেদনে সাড়া দেবে৷ আর বাংলাদেশ ও ভারতের মানবাধিকার সংগঠনগুলো ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য কাজ করবে৷
এদিকে আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে জানান, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে লেখা ফেলানীর বাবার চিঠির কপি পেয়েছেন৷ তারা মনে করেন, ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামের আবেদন যথার্থ৷ তিনি জানান, তারা ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের জন্য তাঁর পরিবারকে আইনগত সহায়তা করবেন৷ এ জন্য তারা ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন, বলেন নূর খান৷