1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় বিলম্বের প্রচেষ্টা

১৫ মার্চ ২০১৯

ইইউ থেকে বিচ্ছেদের তারিখ স্বল্প অথবা দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে পেছানোর পক্ষে ভোট দিয়েছে ব্রিটেনের সংসদ৷ আগামী সপ্তাহে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের উপর সেই আবেদন নির্ভর করবে৷ ইইউ কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা স্পষ্ট নয়৷

https://p.dw.com/p/3F6Py
ব্রেক্সিট নাটকে অনিশ্চয়তা এখনো দূর হচ্ছে না
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/PA Wire/K. O'Connor

ব্রিটেনের সংসদ সদস্যরা বৃহস্পতিবার আরও কয়েকটি প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে সমর্থন জানিয়ে স্পষ্ট করে দিলেন, তাঁরা কী চান না৷ প্রথমত, নির্ধারিত তারিখে ব্রেক্সিট কার্যকর করা যে আর সম্ভব নয়, সরকারের আনা প্রস্তাব অনুমোদন করে তাঁরা তা মেনে নিলেন৷ অর্থাৎ সরকারকে এবার ইইউ-র কাছে বিচ্ছেদের তারিখ পেছানোর জন্য আবেদন করতে হবে৷ আগামী ২০শে মার্চের মধ্যে বিচ্ছেদ চুক্তির প্রতি সংসদে সমর্থন আদায় করতে পারলে তা কার্যকর করার জন্য কয়েক মাস সময় লাগবে৷ ৩০শে জুন পর্যন্ত সেই মেয়াদ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে৷ সেটা সম্ভব না হলে কমপক্ষে এক বছরের জন্য ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেবার চেষ্টা চালানো হবে৷ বৃহস্পতিবার সংসদে দ্বিতীয় গণভোটের প্রশ্নে আরেকটি প্রতীকী প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেছে৷ ফলে সংসদের সামনে আপাতত বিকল্পের সংখ্যা কমে গেছে৷

আগামী ২১ ও ২২শে মার্চ ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা ব্রিটেনের এই আবেদন বিবেচনা করবেন৷ একটি সদস্য দেশও তার বিরোধিতা করলে ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব হবে না৷ তবে ব্রিটেনে বর্তমান অচলাবস্থা কাটাতে ইইউ নেতারা দীর্ঘমেয়াদি বিলম্বের পক্ষে সমর্থন জানাতে পারেন৷ ইইউ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক এই মর্মে ২৭টি সদস্য দেশের নেতাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন৷ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে তিনি আগামী সপ্তাহের শুরুতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন৷

ব্রেক্সিটের সময়সীমার দীর্ঘ বিলম্ব ঘটলে ব্রিটেনকে একাধিক পদক্ষেপ নিতে হবে৷ প্রথমত আগামী ২৩ থেকে ২৬শে মে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে সে দেশকে অংশ নিতে হবে, যা এক বিদায়ী দেশের পক্ষে অত্যন্ত অস্বস্তিকর হতে বাধ্য৷ তাছাড়া ইইউ বাজেটের জন্য ব্রিটেনকে অর্থ মঞ্জুর করতে হবে৷ ব্রিটেনের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির জের ধরে গোটা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা ব্রেক্সিটকে ঘিরে এমন অনিশ্চয়তা মেনে নিতে প্রস্তুত কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ সরকারের জোটসঙ্গী উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি পার্টি-কেও এমন পরিণতি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে৷ এই দুই শিবিরের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যদি আগামী সপ্তাহের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তির প্রতি সমর্থন জানাতে প্রস্তুত হয়, সে ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ বিলম্ব এড়ানো সম্ভব হবে৷ প্রধানমন্ত্রী তাদের এই বিড়ম্বনাকে সম্বল করে তৃতীয়বারের মতো সংসদে সেই প্রস্তাব পেশ করতে পারেন৷

ব্রেক্সিটের দীর্ঘমেয়াদি বিলম্বের বিপক্ষেও ইউরোপে কিছু যুক্তি রয়েছে৷ প্রথমত, একটি সদস্য দেশের দীর্ঘ, জটিল ও অনিশ্চিত বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া নিয়ে আর সময় নষ্ট করতে চাইছে না অনেক সদস্য দেশ৷ দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ব্রিটেন আবার অংশ নিলে বেশ কিছু জটিলতা সৃষ্টি হবে৷ সীমিত সময়ের জন্য আসনসংখ্যায় রদবদল জটিল বিষয়৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রধান সংসদীয় শিবিরগুলির মধ্যে ব্রিটিশ রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিত্ব নিয়েও সমস্যা রয়েছে৷ তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্রিটেন থেকে ইউরোপ-বিরোধী, পপুলিস্ট সদস্যরা এসে ইউরোপে সমমনস্ক দলগুলির শক্তি আরও বাড়াতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন মূল স্রোতের রাজনৈতিক নেতারা৷ এই সব উদ্বেগের কারণে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার টুস্ক-এর কাছে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট সংক্রান্ত সমন্বয়ক গি ফ্যারহোফস্টাট আবার যত দ্রুত সম্ভব ব্রেক্সিট কার্যকর করার ডাক দিয়েছেন৷ ব্রিটেন কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা পেশ না করলে ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রে বিলম্ব চান না তিনি৷

এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)