বিশ্বে মৃত্যুর অর্ধেক ইউরোপে
২৪ এপ্রিল ২০২০যেখানে যত বেশি পরীক্ষা হচ্ছে, সেখানেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা বেশি ধরা পড়ছে৷ সেই অর্থে ইউরোপে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি করে চোখে পড়ার মতো৷ সংক্রমণ ও মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে ব্যাপক আকারে বিশ্লেষণও করা হচ্ছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ দপ্তর এমন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, ইউরোপে করোনা সংক্রমণের ফলে মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক ঘটনা কেয়ার হোমে ঘটেছে৷
বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ দপ্তরের প্রধান ড. হান্স ক্লুগে সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন, এ এক অভাবনীয় ট্র্যাজেডি৷ বৃদ্ধাশ্রমের পরিষেবার মান অনেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত নিম্ন মানের হওয়ায় মারাত্মক চিত্র উঠে আসছে৷ ক্লুগে আরো বলেন, এমন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রায়ই অত্যন্ত কম বেতনের বিনিময়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়৷ তাঁদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে তাঁদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি৷
ড. ক্লুগে মনে করিয়ে দেন, এখনো পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনার প্রায় অর্ধেকই ইউরোপে ঘটেছে৷ ইউরোপের কিছু দেশে পরিস্থিতি স্থিতিশীল এবং কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি সত্ত্বেও মহামারি মোটেই শেষ হয়নি৷ বিশেষ করে পূর্বে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইউক্রেনে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেলারুশ, তুর্কমেনিস্তান ও তাজিকিস্তানে বিশেষজ্ঞদের দল পাঠাচ্ছে৷
শুধু স্বাস্থ সংকট নয়, ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট নিয়েও দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে৷ লকডাউন ও অন্যান্য পদক্ষেপের ফলে গোটা মহাদেশে অকল্পনীয় মন্দার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ ব্যবসা-বাণিজ্য যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা কাটিয়ে তোলা কঠিন হবে বলে একাধিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে৷ বেরেনবার্গ ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ফ্লোরিয়ান হেনসে সংবাদ সংস্থা এপি-কে বলেন, কোভিড-১৯-এর প্রসার রুখতে পদক্ষেপের জের ধরে গোটা ইউরোপ জুড়ে অর্থনীতি বিকল করে দিয়েছে৷ লকডাউনের মেয়াদ আরো বাড়ার সম্ভাবনা থাকায় পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ বিশেষ করে পরিষেবা ক্ষেত্র মারত্মক ক্ষতির মুখ দেখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ এমন প্রেক্ষাপটে চরম বেকারত্বের আশঙ্কা মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে৷
বিপর্যস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ইউরোপীয় ও জাতীয় স্তরে অনুদান, আর্থিক সহায়তা, ভরতুকি ও ঋণের মতো নানা রকম উদ্যোগের ফলে কার্যক্ষেত্রে কতটা সুফল পাওয়া যাবে, এখনই তার পূ্র্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে না৷ আরো বেশিকাল ধরে সংকট চলতে থাকলে তার পরিণাম সম্পর্কেও কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না৷
এসবি/এসিবি (এপি, এএফপি)